ভিজিএফের চাল আত্মসাৎ, ইউপি সচিবের নামে জিডি

সরকারের ভিজিএফ কর্মসূচির চাল বিক্রির অভিযোগে ময়মনসিংহের নান্দাইলের এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সচিবের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। ওই সচিবের নাম মাহবুবুল আলম। তিনি উপজেলার চর বেতাগৈর ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত। রোববার নান্দাইল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. আবদুল আলীম নান্দাইল মডেল থানায় জিডি করেন।

মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর আহমেদ বলেন, থানায় জিডি রেকর্ড করে একটি প্রতিবেদনসহ সেটি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বরাবরে পাঠানো হয়েছে। জিডির অভিযোগ দুদক তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে হতদরিদ্র ব্যক্তিদের জন্য সরকারিভাবে খাদ্যসহায়তা হিসেবে (ভিজিএফ বা ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং) চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। নান্দাইল উপজেলার চর বেতাগৈর ইউনিয়নের ৪ হাজার ৩৮৭ জন কার্ডধারীর বিপরীতে মাথাপিছু ১০ কেজি করে মোট ৪৩ দশমিক ৮৭ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়।

এলাকাবাসী ও জিডির বিবরণ সূত্র জানা যায়, ঈদের আগে গত ২৩ জুলাই একজন তদারকি কর্মকর্তার উপস্থিতিতে উপকারভোগীদের মধ্যে চাল বিতরণের কাজ শুরু হয়। ২৬ জুলাই পর্যন্ত ৩ হাজার ৬৭৭ জন কার্ডধারীর মধ্যে চাল বিতরণের পর সন্ধ্যা নেমে এলে ৭১০ জন কার্ডধারীর চাল ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সচিবের জিম্মায় ইউপি ভবনের গুদামে মজুত রাখা হয়।

সূত্র জানায়, ২৯ জুলাই ইউপির গুদামে চালের সন্তোষজনক মজুত দেখতে না পেয়ে ওই দিনই ইউপি চেয়ারম্যান মো. ফরিদ উদ্দিন নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. এরশাদ উদ্দিনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে তিনি ইউপি সচিব মাহবুবুল আলম ভিজিএফ কর্মসূচির চাল বিক্রি করে দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন।

তদন্তের বিষয়ে ইউএনও মো. এরশাদ উদ্দিন প্রথম আলোকে জানান, তিনি মজুত পরীক্ষা করে সেখানে হিসাবের চেয়ে চার মেট্রিক টন চাল কম দেখতে পান। এ বিষয়ে ইউপি সচিবকে প্রশ্ন করেও তিনি সন্তোষজনক জবাব পাননি।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য যোগাযোগ করা হলে রোববার ইউপি সচিবের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তিনি দুই সপ্তাহ ধরে ইউপিতে আসছেন না বলে জানা যায়। তবে ৪ আগস্ট ইউপি সচিব মাহবুবুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ভিজিএফ বরাদ্দ বিক্রি করেননি। উপজেলা ও ইউনিয়ন ভিজিএফ কমিটির সদস্যদের সুপারিশে তিনি শতাধিক ব্যক্তির মধ্যে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করেছেন। অন্যদিকে সাধারণ ডায়েরিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিবাদী মাহবুবুল আলম (ইউপি সচিব) সরকারি চাল হতদরিদ্র ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ না করে অন্যদের যোগসাজশে আত্মসাৎ করেছেন।