ফেরি চলাচল বারবার ব্যাহত, ভোগান্তি

ঘন কুয়াশার কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে গত শনিবার রাতেও কুয়াশার কারণে ফেরি চলাচল বারবার বন্ধ হয়। এতে উভয় ঘাটে অনেক যানবাহন আটকে থাকে। এ কারণে হাজারো যাত্রীকে পোহাতে হয় অবর্ণনীয় ভোগান্তি।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) ও ঘাটসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে ঘন কুয়াশার কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি ও লঞ্চসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। প্রায় প্রতি রাতে পাঁচ থেকে আট ঘণ্টা করে ফেরি বন্ধ থাকছে। এতে উভয় ঘাটে আটকা পড়ছে শত শত গাড়ি। অনেক যান দিন শেষে নদী পাড়ি দিতে না পারায় ঘাটেই আটকে থাকছে। এভাবে অনেক চালককে দুই দিনও অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

যশোর থেকে পণ্যবোঝাই করে গাজীপুরের উদ্দেশে গত শুক্রবার বিকেলে দৌলতদিয়ায় আসেন ট্রাকচালক ইব্রাহিম শেখ। তিনি গতকাল রোববার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর আগে বেশ কিছু যানবাহন থাকায় লম্বা সারিতে পড়তে হয়। রাতে কুয়াশার কারণে ফেরি চলাচল বন্ধ হলে তাঁদের সারা রাত মহাসড়কেই অপেক্ষা করতে হয়। কুয়াশা কেটে গেলে ফেরি চালুর পর যাত্রীবাহী বাস ও জরুরি পণ্যবাহী গাড়ি আগে পার করা হয়। এ কারণে তিনি এখনো নদী পাড়ি দিতে পারেননি।

গত শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে নদী অববাহিকায় অতিরিক্ত কুয়াশা পড়তে থাকলে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় ফেরি চলাচল ব্যাহত হয়। রাত ১০টা থেকে কর্তৃপক্ষ ফেরি বন্ধ করে দেয়। এ সময় দুই ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া রোরো ফেরি এনায়েতপুরী, শাহজালাল ও খানজাহান আলী এবং কেটাইপ ফেরি কপোতী ৪২টির মতো যানবাহন নিয়ে নদীতে আটকা পড়ে। দুই ঘাটের কাছে আটকা পড়ে আরও ছোট-বড় তিনটি ফেরি। এসব ফেরিতে অন্তত ৭৫টির মতো যানবাহন ছিল। গতকাল সকাল সাড়ে সাতটার দিকে কুয়াশা কম দেখে কর্তৃপক্ষ আবার ফেরি চালু করে। প্রায় ঘণ্টা খানেক চলার পর কুয়াশার কারণে ফেরি চলাচল আবার বন্ধ হয়। এ সময় উভয় ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া ছোট-বড় পাঁচটি ফেরি ঘাট থেকে কিছু দূরে আটকা পড়ে। সকাল সোয়া নয়টার দিকে কুয়াশা কমে গেলে আবার ফেরি চালু হয়। দীর্ঘ সময় ফেরি বন্ধের কারণে উভয় ঘাটে আটকা পড়ে প্রায় হাজার খানেক যানবাহন। এতে দুর্ভোগে পড়েন যানবাহনের কয়েক হাজার যাত্রী।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শফিকুল ইসলাম জানান, পর্যাপ্ত সংখ্যক ফেরি আছে। কিন্তু প্রাকৃতিক এই দুর্যোগের কারণে প্রায় রাতে বন্ধ থাকছে ফেরি। এ সময় সবাইকে সাময়িক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।     

    বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মহিউদ্দিন রাসেল বলেন, পারাপার শুরু হলে যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাত্রীবাহী কোচগুলো আগে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। গতকাল বেলা ১১টার দিকে যানবাহনের চাপ স্বাভাবিক হয়ে আসে।