বারী সিদ্দিকী আর নেই

বারী সিদ্দিকী
বারী সিদ্দিকী

প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী ও বংশীবাদক বারী সিদ্দিকী আর নেই। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টা নাগাদ রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়ে আর অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। বারী সিদ্দিকী বাংলাদেশ টেলিভিশনে সংগীত পরিচালক ও মুখ্য বাদ্যযন্ত্রশিল্পী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

বড় ছেলে সাব্বির সিদ্দিকী প্রথম আলোকে জানান, বারী সিদ্দিকীকে দাফন করানোর জন্য রাতেই মোহাম্মদপুরে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মরদেহ শুক্রবার সকাল ৭টায় ধানমন্ডি ১৪/এ সড়কে তাঁর বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে। সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বারী সিদ্দিকীর প্রথম জানাজা হবে, সকাল সাড়ে ১০টায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনে দ্বিতীয় জানাজা হবে। বাদ আসর তৃতীয় ও শেষ জানাজা হবে নেত্রকোনা সরকারি কলেজে। এরপর বারী সিদ্দিকীকে নেত্রকোনার কারলি গ্রামে ‘বাউল বাড়ি’তে দাফন করা হবে।

বারী সিদ্দিকী দুই বছর ধরে কিডনি সমস্যায় ভুগছিলেন। তাঁর দুটি কিডনি অকার্যকর ছিল। তিনি বহুমূত্র রোগেও ভুগছিলেন। গত ১৭ নভেম্বর রাতে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এরপর তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়, তখন তিনি অচেতন ছিলেন। তাঁকে দ্রুত নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়।

বারী সিদ্দিকী
বারী সিদ্দিকী

সাব্বির সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত বছর থেকে সপ্তাহে তিন দিন কিডনির ডায়ালাইসিস করছেন বারী সিদ্দিকী। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরে যান। সেখান থেকে রাত ১০টা নাগাদ বাসায় ফেরেন। তখনো তিনি স্বাভাবিক ছিলেন। কোনো অসুস্থতার কথা বলেননি। গভীর রাতে হঠাৎ তিনি গুরুতর হৃদরোগে আক্রান্ত হন। মুহূর্তেই অচেতন হয়ে পড়েন।’

বারী সিদ্দিকীর অন্যতম শিষ্য জলের গানের শিল্পী রাহুল আনন্দ বলেন, ‘গুরুজির অসম্ভব মনের জোর। অনেক দিন থেকে কিডনির সমস্যায় ভুগছেন। কিন্তু দেখে কিংবা কথা বলে তা বোঝার উপায় ছিল না। তিনি গান গেয়ে গেছেন। এই তো সেদিন হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষেও টিভি চ্যানেলে তিনি গান গেয়েছেন, কথা বলেছেন।’

দীর্ঘদিন সংগীতের সঙ্গে জড়িত থাকায় সবার কাছে বারী সিদ্দিকী সংগীতশিল্পী হিসেবে পরিচিতি পান। ওই বছর হুমায়ূন আহমেদের ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ ছবিটি মুক্তি পায়। এই ছবিতে তিনি ছয়টি গান গেয়েছেন। তাঁর জনপ্রিয় হওয়া গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘শুয়াচান পাখি আমি ডাকিতাছি তুমি ঘুমাইছ নাকি’, ‘পুবালি বাতাসে’, ‘আমার গায়ে যত দুঃখ সয়’, ‘ওলো ভাবিজান নাউ বাওয়া’, ‘মানুষ ধরো মানুষ ভজো’। এরপর তিনি চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেছেন। তাঁর গাওয়া গান নিয়ে বেরিয়েছে অডিও অ্যালবাম।