নতুন স্বপ্ন দেখছেন জান্নাতুল নাঈম

জান্নাতুল নাঈম, ছবি: খালেদ সরকার
জান্নাতুল নাঈম, ছবি: খালেদ সরকার

২০১৬ সালে ঢাকায় এসেছেন জান্নাতুল নাঈম। কিছু একটা করতে হবে—এটাই ছিল লক্ষ্য। তারপর তো মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশে নাম লেখানো। ঘড়ির কাঁটার মতো ঠিকঠাকই চলছিল সব। তারপর?
তারপর যা ঘটেছে সেটা পুরোপুরি ভুলে যেতে চান জান্নাতুল নাঈম এভ্রিল। বললেন, ‘কারও বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। আমি মনে করি, যা কিছু হয়েছে সেগুলো আমার অভিজ্ঞতা। শুধু দুঃখ একটাই, মানুষকে বোঝাতে চেয়েছি এক রকম, বুঝেছে আরেক রকম।’
এভ্রিল সংশোধন করে দেন, ‘এটা কিন্তু আমার ব্যক্তিগত দুঃখ। অভিযোগ নয়।’ এভ্রিলের ভুলে যেতে চাওয়া বিষয়গুলো নিয়ে আর কথা বাড়াই না। জানতে চাই, যদি আপনার জীবনের তিনটা লক্ষ্যের কথা জানতে চাই। সেগুলো কী?
চটপটে এভ্রিল এবার একটু নড়েচড়ে বসেন। ভাবেন। বেশ গুছিয়ে নিয়ে বলেন, ‘এক. আমার আইডল হলেন বেগম রোকেয়া, মাদার তেরেসার মতো ব্যক্তিত্ব। একটা সময়ে গিয়ে তাঁদের মতো কিছু কাজ করতে চাই। দুই. এভ্রিল ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সারা দেশে বাল্যবিবাহ ও যৌতুকের মতো সামাজিক ব্যাধি দূর করা। তিন. মোটর ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ওপর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করা।’
হাতের কড় গুনে গুনে শেষ করেন তিনি। তাহলে এই যে মিডিয়াতে কাজ করছেন, এটা নিয়ে কোনো স্বপ্ন নাই? প্রশ্ন শেষ হওয়ার আগেই লুফে নেন এভ্রিল। ‘কে বলেছে নাই। আমার খুব প্রিয় কয়েকজন অভিনেত্রী আছেন। শাবানা, শাবনূর, পূর্ণিমা, মৌসুমী। তাঁদের সবার যে গুণ আছে, সবকিছুর মিশ্রণটা নিজের মধ্যে ধারণ করতে চাই। তারপর ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে চাই।’
পরের প্রশ্ন করার আগেই এভ্রিল আবার শুরু করেন। ‘আমার কিন্তু স্বপ্নের শেষ নাই। আমি মনে করি, স্বপ্ন ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারে না। আমার একটা স্বপ্ন পূরণ হবে, আরেকটার পেছনে দৌড়াব।’
এখন দৌড়টা কী নিয়ে? ‘আমি বিজ্ঞাপন, মিউজিক ভিডিও, র‍্যাম্প ও নানা ধরনের মঞ্চের অনুষ্ঠান করছি। আর একটা ধারাবাহিকে অভিনয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। দিন শেষে আমার চলচ্চিত্রেই নিয়মিত হওয়ার ইচ্ছা।’
বড় পর্দা লক্ষ্য হলে ছোট পর্দায় কেন? উত্তরটা মিলে গেল পরের কথায়। ‘ধারাবাহিক নাটকে নিয়মিত অভিনয় করে আমি সবার পরিবারের সদস্য হতে চাই। তারপর এই পরিবারের সদস্য চলচ্চিত্রে কেমন অভিনয় করলেন, সেটা দেখার জন্য নিশ্চয়ই প্রেক্ষাগৃহে যাবেন সবাই। এরই মধ্যে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের ব্যাপারে আলাপ চূড়ান্ত হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে ছবির ব্যাপারে জানাবে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান।’
জানতে চাই, আপনার জীবনের কোনো ভুল আছে? এভ্রিল এবারও খানিকটা সময় নেয়। ভুল খুঁজে বেড়ান হয়তো। তারপর বলেন, ‘আমি তো কোনো ভুল খুঁজে পাচ্ছি না, বরং ভুলটাই ফুল হয়ে ফুটেছে আমার জীবনে। আমার আজ বিয়ে করে স্বামী সন্তান নিয়ে সংসার করার কথা। কিন্তু সেটা তো হয়নি। আমি ঠিকই স্বপ্নের পথে এগোচ্ছি।’
শোনা গিয়েছিল, জেসিয়া তাঁর খুব কাছের বন্ধু। এখনো কি যোগাযোগ আছে? তাঁর সম্পর্কে মূল্যায়ন কী? বলবেন না বলবেন করেও খানিকটা অকপট হলেন বোধ হয়। ‘জেসিয়া আমার খুব কাছের বন্ধু। কিন্তু এখন যোগাযোগ নেই। ওকে আগেও এই কথাগুলো বলেছি। জেসিয়া, তোর শুধু একটাই সমস্যা, তুই হাসিমুখে মানুষের সঙ্গে মিশতে পারিস না। কথা বলতে পারিস না। জেসিয়া যদি সবাইকে আপন ভাবে, তাহলে ও অনেক দূর যেতে পারবে। আপাতত এইটুকুই।’
উঠতে উঠতে বললেন, ‘আমার এখনকার যুদ্ধটা নিজেকে নিয়ে। আমি আরও বিনয়ী হতে চাই। মানুষের পাশে থাকতে চাই। আর ভালো কিছু কাজ করতে চাই। আমি জানি সফল হব। কারণ, আমার সঙ্গে সব সময় মায়ের দোয়া আছে।’