যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে নতুন লড়াই

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নীরবতা ভেঙে যৌন হয়রানির কথা প্রকাশ করে গত বছর আওয়াজ তুলেছিল হ্যাশট্যাগ মি টু আন্দোলন। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছরের শুরুতে যাত্রা শুরু হলো ‘টাইমস আপ’ উদ্যোগের। চলচ্চিত্র অঙ্গনসহ সব কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির শিকার ব্যক্তিকে আইনি সুরক্ষা দেওয়াই এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য।

বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, গত বছরের সাড়া জাগানো আলোচিত বিষয় ছিল হ্যাশট্যাগ মি টু আন্দোলন। হলিউডের প্রভাবশালী প্রযোজক হার্ভে উইনস্টেইনের যৌন কেলেঙ্কারির প্রতিবাদে অভিনেত্রী অ্যালিসা মিলানোর ডাকে গড়ে ওঠে এ আন্দোলন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের নানা পেশার নারী ও অল্পসংখ্যক পুরুষ এতে অংশ নেন। জানিয়ে দেন নিজেদের জীবনে ঘটে যাওয়া যৌন হয়রানির দুঃসহ কষ্টগুলোর কথা। আর এসবে ভরে যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পর্দা। সমসাময়িককালের সাড়া জাগানো এই আন্দোলনকে স্বীকৃতি দেয় প্রভাবশালী টাইম ম্যাগাজিন। এ আন্দোলনে শরিক হয়ে প্রথা ভেঙে যারা যৌন হয়রানির কথা তুলে ধরেছেন, টাইম তাদের ‘পারসন অব দ্য ইয়ার’ ঘোষণা করে।

এটুকু সাফল্যেই তৃপ্তির ঢেকুর তুলে থেমে যেতে চাননি কেউ। হলিউডের অভিনেত্রীরা শুধু যৌন হয়রানির অভিজ্ঞতা তুলে ধরেই নিজেদের দায়িত্ব সারেননি। বরং বিষয়টিকে আরও সামনে কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়, সে বিষয়ে ভেবে ‘টাইমস আপ’ উদ্যোগ নিয়েছেন। এই তালিকায় হলিউড অভিনেত্রী মেরিল স্ট্রিপ থেকে হালের এমা স্টোন পর্যন্ত শামিল হয়েছেন। সব মিলিয়ে তিন শতাধিক অভিনেত্রী, লেখক ও পরিচালক এ উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত।

নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় পুরো এক পাতার বিজ্ঞাপন দিয়ে ‘টাইমস আপ’ উদ্যোগের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তারা বলেছে, এখনো অনেক নারী অসহায় অবস্থায় আছেন। হরহামেশা তাঁদের যৌন হয়রানির শিকার হতে হয়। তাঁদের কথা কেউ বলে না। অসহায় এই মানুষগুলোর কথা কারও কানে পৌঁছায় না। গণমাধ্যম যেন সেসব নারীর কথা বলেন, সে আর্তি জানানো হয়েছে।

ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক ‘সংহতি চিঠি’তে টাইমস আপ বলছে, ‘আমরা সেসব অসহায় নারীর পাশে দাঁড়াতে চাই, আইনি লড়াইয়ে সহায়তা করতে চাই; যারা কোনো না কোনোভাবে যৌন হয়রানির শিকার। সেটা হতে পারে কৃষিকাজে যুক্ত ঊর্ধ্বতন ব্যক্তির কাছে যৌন হয়রানির শিকার কৃষাণী, অতিথির কাছে হয়রানির শিকার হওয়া গৃহ তত্ত্বাবধায়ক নারী, প্রতিটি হোটেলে ক্রেতার অশালীন দৃষ্টির শিকার নারী কর্মী।’ তবে কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির শিকার পুরুষের পাশেও আইনি সহায়তা নিয়ে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছে তারা।

এই উদ্যোগ সফল করতে দেড় কোটি ডলারের তহবিল গড়া হবে। ইতিমধ্যে এক কোটি ৩০ লাখ ডলার পরিমাণ অর্থ পাওয়া গেছে। নাটালি পোর্টম্যান, হ্যালি বেরি, জুলিয়ান মুর, নিকোল কিডম্যান, সুসান সারান্ডন, প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সেল পিকচার্সের প্রধান ডোনা লংলি, নারী অধিকারকর্মী গ্লোরিয়া স্টেইনেম, আইনজীবী ও সাবেক ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামার চিফ অব স্টাফ টিনা চেন ও নাইকি ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি মারিয়া ইটেলসহ আরও অসংখ্য নারীর প্রত্যক্ষ অবদানে তহবিলে এই অর্থ জমা পড়েছে।