নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন সুপারওম্যান হতে চান না

বিবিসির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
বিবিসির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

আর খুব বেশি দিন অপেক্ষা করতে হবে না। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী জুন মাসেই মা হওয়ার কথা নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্নের। আর সব মায়ের মতো তিনিও এ নিয়ে উচ্ছ্বসিত। তিনি সন্তানকে নিয়ে নিজের অনুভূতির কথা জানিয়েছেন বিবিসিকে।

আজ সোমবার জাসিন্ডা আরডার্নের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের একটি ভিডিও প্রচার করেছে বিবিসি। সেখানে নিজের মাতৃত্ব ও সন্তানকে নিয়ে অকপটে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর মাতৃত্ব নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অন্যদের আগ্রহ উপভোগ করেন জাসিন্ডা। অনেকেই সন্তানের দেখভালের দায়িত্ব নিয়ে নিতে চান। সন্তানের লালনপালন ও ভবিষ্যৎ নিয়ে তাঁকে আশ্বস্ত করেন। এমনকি কমনওয়েলথ বৈঠকেও বিভিন্ন দেশের প্রধানেরা তাঁকে বলেছেন, জন্মের পর তোমার সন্তানকে নিয়ে এসো। আমরা দেখাশোনা করব।

বাবা ক্লার্ক গেফোর্ড কীভাবে সন্তান সামলাবেন, তা নিয়ে জাসিন্ডার ভাবনা কেমন, বিবিসির সাক্ষাৎকারে জানতে চাওয়া হয়। জাসিন্ডা বলেন, তিনি এ নিয়ে এখন কিছু ভাবছেন না। সময়ই সব বলে দেবে। এ নিয়ে তাঁর কোনো বাড়তি আশা নেই।

দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জাসিন্ডা আরডার্নের দায়িত্ব অনেক। সন্তানের লালনপালন নিয়ে তাই তাঁরা কোনো পরিকল্পনা করেছেন কি না, তা জানতে চায় বিবিসি। উত্তরে একগাল হেসে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জানান, তাঁদের কোনো পরিকল্পনা নেই। সন্তান এলেই তাঁরা সবকিছু সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সামলে নেবেন।

একই সঙ্গে মায়ের এবং দেশ সামলানোর গুরুদায়িত্ব কীভাবে সামলাবেন, তা জানতে চাইলে জাসিন্ডা আরডার্ন বলেন, সব মায়েরই এমন দুশ্চিন্তা থাকে। সব মা সন্তান জন্মের আগে এমনটা ভাবেন। তবে তাঁর ক্ষেত্রে ব্যাপারটা হয়তো একটু আলাদা। কারণ, জনগণ আশা করবে, সবকিছুর ওপর তিনি একজন প্রধানমন্ত্রী।

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি সুপারওম্যান না। তিনি সুপারওম্যান হতেও চান না। কোনো নারীকেই সুপারওম্যান ভাবা উচিত না। কারণ, এটি বাস্তবে প্রায় অসম্ভব একটি ব্যাপার। নারী পরিশ্রম, মেধা, দৃঢ়তা ও সহযোগিতার মাধ্যমে সবকিছু অর্জন করে। নারী একাই দশ হাতে সব সামলাবে—এই ধারণায় বিশ্বাসী নন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী। এটাকে কোনো যোগ্যতা বলেও তিনি মনে করেন না। কারণ, এতে নারীর কাজ আরও কঠিন হয়। নারীকে কর্মক্ষেত্রে সাফল্য পেতে যুদ্ধ করতে হয়। নিজেই সবকিছু করার প্রবণতা থেকে নারীর সরে আসা উচিত।

বিবিসি প্রশ্ন করে, তাহলে এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর জীবনসঙ্গী ক্লার্কের সাহায্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ? উত্তরে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন বলেন, অবশ্যই। সবার ক্ষেত্রেই জীবনসঙ্গীর সহযোগিতা খুবই দরকার। আর এ ক্ষেত্রে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর মাতৃত্ব নিয়ে সব জায়গায় এত প্রশ্নের সম্মুখীন হতে গিয়ে বিব্রতবোধ করেন কি না, তা জানতে চাইলে জাসিন্ডা বলেন, একেবারেই না। এ নিয়ে তিনি যথেষ্ট বাস্তববাদী। বিশ্বে দ্বিতীয়বারের মতো একজন প্রধানমন্ত্রী মা হচ্ছেন। তাই এ নিয়ে সবার আগ্রহী হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আশা করেন, ভবিষ্যতে হয়তো সবাই এ রকম ঘটনা স্বাভাবিকভাবে নিতে পারবে।