যেভাবে সিগারেট ছাড়লেন তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়  অলংকরণ: তুলি
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় অলংকরণ: তুলি

কথাশিল্পী তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় চিরকালই ছিলেন নিয়মিত ধূমপানে অভ্যস্ত। জীবনে প্রায় পঞ্চাশ বছর সিগারেট ফুঁকে কাটিয়েছেন। কিন্তু একবার এক সাহিত্য পুরস্কার পাওয়ার পর তখনকার তরুণ লেখক-সাংবাদিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর বাড়িতে সাক্ষাৎকার নিতে এলে কথায় কথায় তারাশঙ্কর জানান, ‘আমার জেদ চিরকালই বড্ড বেশি। এই দেখো না জেদের বশে পঞ্চাশ-পঞ্চান্ন বছর ধরে সিগারেট খাওয়ার অভ্যেস এক দিনে ছেড়ে দিলুম।’ নবীন সুনীল এ কথা শুনে প্রায় আকাশ থেকে পড়লেন। কারণ, ‘চেইন স্মোকার’ তারাশঙ্কর আচমকা এক দিনের নোটিশে সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিতে পারেন, তা তো সূর্য পশ্চিমে ওঠার মতোই অসম্ভব। কৌতূহলী হয়ে তাই পাল্টা জিজ্ঞেস করলেন সুনীল, ‘এত কঠিন কাজ এক দিনে করলেন কী করে?’ জবাবে কোনো কথা না বলে তারাশঙ্কর শুধু নিজের বাঁ হাতটা উঁচু করে দেখালেন, হাতজুড়ে অসংখ্য পোড়া দাগ। যেন কেউ ছেঁকা দিয়েছে। সুনীল ভয়ে চমকে উঠে বললেন, ‘এ কী হয়েছে!’ তারাশঙ্কর শান্ত জবাব দিলেন, ‘কিছু না। সিগারেট ছাড়ার পর ও জিনিস আবার খেতে লোভ হলেই সিগারেট ধরিয়ে নিজের হাতে ছেঁকা দিয়েছি। তাই এখন আর লোভ হয় না।’

সূত্র: বিনোদ ঘোষালের বাংলা সাহিত্যের দশ দিক।

গ্রন্থনা: মুহিত হাসান