গুলশান বনানী উত্তরায় আওয়ামীপল্লি

প্রথম আলো ২৫ বছর ধরে অসংখ্য অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ছেপেছে। পেয়েছে অগণিত পাঠকের অকুণ্ঠ প্রশংসা। এর অনেক প্রতিবেদন দুর্নীতির স্বরূপ উন্মোচন করেছে। আবার মানুষের জীবন বদলে দিয়েছে কোনো কোনোটি। এমন একটি প্রতিবেদনের চুম্বক অংশ তুলে আনা হলো এখানে।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক)

রাজধানী উন্নয়ন কর্তপক্ষের (রাজউক) গুলশান, বনানী ও উত্তরার আবাসিক এলাকায় বরাদ্দ করা জমির প্লটের অধিকাংশই পেয়েছিলেন ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী ও নেতা-কর্মীরা। মোট বরাদ্দপ্রাপ্ত ৩০১ জন। তাঁদের মধ্যে ১১ জন মন্ত্রী, ৬১ জন সরকারি দলের সংসদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা ৭ জন ও তাঁদের আত্মীয়স্বজন এবং শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতা ও তাঁদের আত্মীয়স্বজন। অর্থাৎ ক্ষমতাসীন দলেরই কমপক্ষে ১৮০ জন।   

১৯৯৯ সালের ১০ জুলাই প্রথম আলোয় প্রকাশিত এ খবরটি ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। পরদিন একটি সংবাদ বিশ্লেষণ লিখেন সাংবাদিক আবেদ খান। ‘সরকার কেন জমির দালাল হবে?’ শিরোনামে তিনি লিখেছিলেন, ‘চোখের পর্দাটাও কি চলে গেল? রাজউকের প্লট বাদ্দ নিয়ে এ কী কাণ্ড করে বসল আওয়ামী লীগ সরকার! রীতিমতো আওয়ামীপল্লি বানিয়ে ফেলল। রাজউকের প্লট কি আত্মীয় কল্যাণ সমিতির সম্পত্তি হয়ে গেল?’ এ কথাগুলো বলেছেন আওয়ামী লীগের একজন নিঃস্বার্থ কর্মী এবং মুক্তিযোদ্ধা।

খবর প্রকাশের এক সপ্তাহ পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুলশান, বনানী ও উত্তরায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ৩০১টি প্লট বরাদ্দের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত বাতিল ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘সমস্ত প্লট ক্যানসেল করে দিয়েছি, কাউকে প্লট দেওয়া হবে না।’ কিন্তু একই সঙ্গে প্লট বরাদ্দে কোনো অনিয়ম হয়নি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেহেতু সমালোচনা হয়েছে, তাই বাতিল করা হবে।’