আমি সাহসী হয়ে উঠছি

পড়তে আমার ভালো লাগে। সে যা–ই হোক। কাগজের ছোট একটা টুকরাও যদি চোখের সামনে পড়ে, তাহলে সেটা না পড়ে ফেলি না। পত্রিকা হলে তো কথাই নেই। অসংখ্য পত্রিকার ভিড়ে যে পত্রিকাটি আমার মন কেড়ে নিয়েছে, সেটা হলো প্রথম আলো। আমি প্রথম আলোর একজন নিয়মিত পাঠক।

কোনো দিন যদি প্রথম আলোর পরিবর্তে অন্য কোনো পত্রিকা দেয়, তাহলে মনে হয় সেদিন যেন পত্রিকাই পড়া হয়নি। কী নেই এতে! সব ধরনের পাঠকের চাহিদা মেটানোর ক্ষমতা রয়েছে এতে। টেলিভিশনের খবর দেখলেও অপেক্ষা করি প্রথম আলোতে বিস্তারিত পড়বার জন্য।

দেশে করোনা শনাক্ত হবার পর মাসখানেক আমাদের এলাকায় পত্রিকা সরবরাহ বন্ধ ছিল। তখন প্রতিটি দিন মনে হতো অন্য কোনো গ্রহে বাস করছি, পৃথিবীর কোনো খবরই জানতে পারছি না। তারপর যেদিন প্রথম আলো পেলাম, মনে হলো যেন অনেক দিন পর প্রাণভরে শ্বাস নিলাম।

একটা সময় নিজেই করোনায় আক্রান্ত হলাম, খুব ভেঙে পড়লাম, ভয় পেয়ে গেলাম। প্রথম আলো তখন করোনা থেকে সুস্থ হওয়া ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতা নিয়ে নিয়মিত লেখা প্রকাশ শুরু করেছে। ওই কলামটা নিয়মিত পড়তাম। আস্তে আস্তে ভয় কমতে থাকল, নিজের আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে শুরু করলাম।

এরপর সাহস করে করোনা নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা লিখে প্রথম আলোতে পাঠিয়ে দিলাম এবং আমাকে অবাক করে দিয়ে প্রথম আলোর অনলাইন ভার্সনে লেখাটা ছাপা হলো। কী যে ভালো লেগেছিল তা বর্ণনাতীত। আমি কোনো দিন কিছু লিখিনি মানে লিখতে পারিনি। সেই আমি করোনা নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা লিখলাম এবং প্রথম আলোর মতো পত্রিকায় সেটা ছাপা হলো, এ যেন অবিশ্বাস্য।

সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আজকের লেখাটাও লিখলাম। তার মানে, করোনা এবং প্রথম আলো আমাকে নিজের মনের কথা প্রকাশ করায় একধাপ এগিয়ে দিল। আমি ক্রমশ সাহসী হয়ে উঠছি। ভবিষ্যতে হয়তো আরও চেষ্টা করব।

করোনার এই অতিমারিতে প্রথম আলো যে নির্ভরযোগ্য, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ ছেপেছে, মানুষের দুঃখ–দুর্দশার চিত্র তুলে ধরেছে, অসহায় মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছে, মানুষের পাশে থেকে তাদের অভয় দিয়েছে, তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।