অখণ্ড কিশোরগঞ্জের দাবি বিভিন্ন সংগঠনের

কিশোরগঞ্জ জেলার অখণ্ডতা রক্ষার দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। কিশোরগঞ্জ সম্মিলিত নাগরিক ফোরাম জেলা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এর আয়োজন করে। এতে যেকোনো মূল্যে জেলার অখণ্ডতা রক্ষার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

২০ মার্চ প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়। এ উপলক্ষে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের কিশোরগঞ্জের ভৈরবকে জেলা করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান। এ বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার পর বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল ওই সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পড়েন কিশোরগঞ্জ সম্মিলিত নাগরিক ফোরামের প্রধান সমন্বয়ক এনায়েত করিম।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কিশোরগঞ্জ জেলাকে খণ্ড-বিখণ্ড করে ভৈরবকে জেলা করার অপচেষ্টা এর আগেও হয়েছিল। তখন সে অপচেষ্টার বিরুদ্ধে পুরো জেলায় দুর্বার আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। এক ভৈরব ছাড়া বাকি ১২ উপজেলার প্রায় সব রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন রাস্তায় নেমে সরকারের আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছিল। জনমতের চাপে সরকারের নীতিনির্ধারকেরা তখন ভৈরবকে জেলা করার বিষয়ে আর অগ্রসর হননি। বিষয়টি মোটামুটি মীমাংসার পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানও কিশোরগঞ্জবাসীর যৌক্তিক দাবির প্রতি সম্মান রেখে যত দিন বেঁচে ছিলেন, এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেননি বা কথা বলেননি। এরই মধ্যে কেটে গেছে সাত বছর। এত দিন পর আবারও সেই মীমাংসিত বিষয়ে কথা বলে কিশোরগঞ্জবাসীকে কষ্ট দিলেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি সময়-সুযোগমতো ভৈরবকে জেলা করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করে নতুন বিতর্ক উসকে দিয়েছেন। এ ধরনের দায়িত্বহীন বক্তব্য গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

লিখিত বক্তব্যে এনায়েত করিম বলেন, ‘কিশোরগঞ্জের মানুষ অখণ্ডতায় বিশ্বাস করি। কিশোরগঞ্জের মানচিত্র নতুনভাবে কাটাছেঁড়া করা হোক, তা চাই না। বহু বছর ধরে বর্তমান ভৌগোলিক ও প্রশাসনিক বিন্যাস কিশোরগঞ্জবাসী নিজেদের জীবনে রপ্ত করে নিয়েছেন, যা জেলার ১৩টি উপজেলার অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনে একটা ভারসাম্য তৈরি করেছে। যখন পুরো কিশোরগঞ্জকে নিয়ে আমরা আরও বড় স্বপ্ন দেখছিলাম, ঠিক তখন আবারও ভৈরবকে জেলা করার নামে কিশোরগঞ্জকে বিভক্ত করার কথা বলা হচ্ছে। কিশোরগঞ্জের বীর জনতা এক হয়ে এ চেষ্টা রুখবে। প্রয়োজনে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে জেলা পরিষদের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য ফৌজিয়া জলিল, প্রেসক্লাবের সভাপতি মোস্তফা কামাল, কিশোরগঞ্জ উইমেন চেম্বারের সভাপতি ফাতেমা জোহরা, নারীনেত্রী বিলকিস বেগম, জেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক সামছুল ইসলাম খান, কিশোরগঞ্জ কবি সংঘের সভাপতি বাঁধন রায় প্রমুখ ছিলেন।