অপ্রীতিকর ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সরকার বদ্ধপরিকর: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ভবিষ্যতে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দিরে এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধে সরকার বদ্ধপরিকর। একই সঙ্গে সরকার আশা করে, সব ধরনের ‘মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে’ দায়িত্বশীল ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে এ নিয়ে নতুন করে জটিলতা কিংবা ভুল-বোঝাবুঝি এড়ানো যেতে পারে।

দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দিরে হামলাকে ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আজ মঙ্গলবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতি দেয়। সেখানে এসব কথা বলা হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জনগণ যখন আনন্দের সঙ্গে দুর্গাপূজা উদ্‌যাপন করছিল, তখন দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দুদের মন্দির এবং প্রতিমার ওপর হামলার খবর প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার কঠোরভাবে ওই ঘটনাগুলোর নিন্দা জানানোর পাশাপাশি দেশে ও দেশে বাইরে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা হিসেবে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার উদ্দেশ্যে দেশের ২২টি জেলায় বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডকে (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরই মধ্যে অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন। তিনি সব পক্ষকে যেকোনো ধরনের উসকানির বিষয়ে সংযত থাকা এবং ভিত্তিহীন গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকা কিংবা ওই ধরনের গুজবে প্রতিক্রিয়া না দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি যেকোনো মূল্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

এরই মধ্যে সরকারের জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিরা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। ওই ঘটনাগুলোর বিষয়ে এ পর্যন্ত ৭১টি মামলা হয়েছে। কুমিল্লার ঘটনার অভিযুক্ত হোতাকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, একটি স্বার্থান্বেষী মহল সন্দেহজনক রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে পূর্বপরিকল্পিতভাবে এই হামলাগুলো চালিয়েছে, যা নিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন। তারা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ, অসাম্প্রদায়িক ও বহুমতের পরিচয়কে ভূলুণ্ঠিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। যথাযথভাবে পূজা উদ্‌যাপনের জন্য হিন্দু সম্প্রদায়ের ভূমিকার প্রশংসার পাশাপাশি সরকার সাধারণ জনগণের সর্বাত্মক সংহতি প্রকাশকে স্বাগত জানিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ এই মূলমন্ত্র প্রচারে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এবং দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার ভবিষ্যৎ অপপ্রয়াস রুখে দেওয়ার পাশাপাশি সরকার সব পক্ষকে সহনশীলতা, অংশগ্রহণমূলক এবং বহুমতের মূল্যবোধ সমুন্নত রাখার আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।