অবশেষে জানা গেল আক্রান্ত ব্যক্তি নাটোর জেলার, তবে থাকেন ঢাকায়

নাটোরে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তি শনাক্ত হননি। সেই হিসাবে জেলাকে করোনামুক্ত হিসেবেই জানে স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে বিপত্তি বাধে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) প্রকাশিত আক্রান্তদের তালিকা নিয়ে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই তালিকায় নাটোরে একজন শনাক্ত বলে উল্লেখ করা হয়।

এ ব্যাপারে নাটোর জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ কিছু না জানায় বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ে। অবশেষে গভীর রাতে জানা যায়, আক্রান্ত ব্যক্তি নাটোর জেলার হলেও তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালের ক্যানটিনে কর্মরত থাকাকালে কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত হন। বর্তমানে তিনি ঢাকাতেই আছেন আইসোলেশনে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিন শেষে আইইডিসিআরের ওয়েবসাইটে জেলাওয়ারি আক্রান্তদের সংখ্যা তুলে ধরা হয়। সেখানে নাটোর জেলায় আক্রান্ত সংখ্যা ১ হিসাবে উল্লেখ করা হয়। তালিকাটি দেখার পর জেলার সর্বত্র খোঁজ নিয়ে এ ধরনের রোগীর সন্ধান পাওয়া যায় না। স্বাস্থ্য বিভাগ রাজশাহী করোনাভাইরাস পরীক্ষাগারেও খোঁজ নিয়ে এই রোগীর সন্ধান পায় না। এর আগ পর্যন্ত জেলায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের রোগী শনাক্ত না হওয়ায় তালিকাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানাজন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করতে থাকেন। কিন্তু কেউ কোনোভাবে আক্রান্ত ব্যক্তির বিষয়ে তথ্য পাচ্ছিলেন না।

অবশেষে রাত পৌনে ১২টায় আইইডিসিআর নাটোর স্বাস্থ্য বিভাগকে জানায়, তাঁরা যে রোগীর কথা উল্লেখ করেছেন, তিনি ঢাকার তেজগাঁওয়ের একটি হাসপাতালের ক্যানটিনে কাজ করতেন। আক্রান্ত হয়ে সেখানে তিনি আইসোলেশনে আছেন। তাঁর বাড়ি নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলায়। নমুনা সংগ্রহের সময় তিনি নাটোরের ঠিকানা দেওয়ায় এই বিভ্রান্তি হয়েছে।

আক্রান্ত ওই ব্যক্তির ভাই জানান, তাঁর ভাই দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় থাকেন। অসুস্থতার খবর শুনলেও তাঁরা কেউ বাড়ি থেকে ঢাকায় যাননি।

নাটোর জেলার সিভিল সার্জন মিজানুর রহমান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা বলতে পারি নাটোর করোনামুক্ত। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ১১৮টি নমুনার ফলাফল এসেছে সেখানে কেউ করোনা আক্রান্ত হননি। তবে ৮১টি নমুনার ফলাফল এখনো জানা যায়নি। রাতে আইইডিসিআর থেকে তালিকার ব্যাখ্যা দেওয়ার পর বিভ্রান্তি দূর হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ বলেন, ‘ওয়েবসাইটে তালিকাটি দেখে চিন্তায় পড়েছিলাম। কারণ, ওই রোগীর কোনো তথ্য আমাদের হাতে ছিল না। যদি শনাক্ত হয়ে থাকেন, তাহলে অন্যান্য সতর্ক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন থাকে। এটা নিয়ে আমাদের উদ্বেগ ছিল।’