অসময়ে টমেটোর চাষ প্রথমবারেই বাজিমাত

গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের হামিন্দপুর গ্রামের দরিদ্র কৃষক দীলিপ কুমার কৃষিকাজ করে কোনো রকমে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। চলতি বছরের জুনের প্রথম দিকে নয় শতক জমিতে তিনি ২৭ হাজার টাকা খরচ করে টমেটো চাষ করেন। ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি তাঁর ওই জমিতে উৎপাদিত ৪০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন।
দীলিপ কুমার বলেন, ওই জমিতে ৯০০টি টমেটোর চারা রোপণ করেন তিনি। টমেটো উৎপাদনে তাঁর খরচ হয় ২৭ হাজার টাকা।
বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি টমেটোর দাম ১০০ থেকে ১২০ টাকা। সে হিসাবে তিনি ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন। তিনি আশা করছেন, টমেটোর চাষ করে এবার তাঁর খরচ বাদে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা লাভ থাকবে।
একইভাবে ইউনিয়নের তরফবাজিত গ্রামের কৃষক নরেশ চন্দ্র এবার তিন শতক জমিতে টমেটোর চাষ করেন। নরেশচন্দ্র বলেন, টমেটো বিক্রি করে এবার তার কমপক্ষে ১৫ হাজার টাকা লাভ থাকবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শীতকালীন সবজি টমেটো বছরের জানুয়ারিতে বাজারে ওঠে। কিন্তু বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বারী-হাইব্রিড-৪ জাতের গ্রীষ্মকালীন টমেটোর বীজ বছরের মে থেকে জুন মাসের মধ্যে বপন করতে হয়। চারার বয়স ২৫-৩০ দিন হলে তা রোপণ করতে হবে উঁচু জমিতে। প্রথমে জমিতে গোবর সার এবং পরে পরিমাণ মতো পটাশ, টিএসপি, জিপসাম, জিংক, বোরণ ও ইউরিয়া ছিটাতে হবে। গাছের ওপর বাঁশের ছাউনি তৈরি করে পলিথিন দিয়ে তা ঢেকে দিতে হবে। রোপণের পর দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে এই টমেটো উত্তোলন করে বাজারজাত করা যায়। প্রতি শতক জমিতে এই জাতের টমেটো চাষে প্রায় তিন হাজার টাকা খরচ হয়।
কৃষি বিভাগ আরও জানায়, এই জাতের টমেটো চাষ গাইবান্ধায় এই প্রথম। এবার সাদুল্যাপুর উপজেলার ১০টি গ্রামের ২৬ জন কৃষক প্রায় তিন একর জমিতে এই টমেটোর চাষ করেছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক আবদুর রাজ্জাক বলেন, চলতি বছর দ্বিতীয় শস্য বহুমুখীকরণ কর্মসূচির আওতায় উপজেলার ওই ২৬ জন কৃষককে এই জাতের টমেটো চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এই টমেটো চাষে অন্য উপজেলার কৃষকদেরও উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। টমেটো পাকানোর জন্য কোনো ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করতে হয় না। গাছ থেকে টমেটো সংগ্রহ করে দুই-তিন দিন ঘরে রাখলেই পেকে যায়।