আমাদের প্রথম কাজ জনগণকে ভোটের অধিকার ফেরত দেওয়া

রেজা কিবরিয়া
ফাইল ছবি

রেজা কিবরিয়া আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে। তিনি অক্সফোর্ডে পড়াশোনা করেছেন। ২০১৮ সালে তিনি আইএমএফের চাকরি ছেড়ে দেশে ফেরেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তিনি গণফোরামে যোগ দেন। হবিগঞ্জ-১ আসন থেকে তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের হয়ে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন। ২০১৯ সালে তিনি গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক হন। গত ৭ ফেব্রুয়ারি তিনি গণফোরাম থেকে পদত্যাগ করেন। ২৬ অক্টোবর আত্মপ্রকাশ করা ‘গণ অধিকার পরিষদ’ নামের নতুন রাজনৈতিক দলের আহ্বায়ক তিনি। দল গঠনের পর আজ বৃহস্পতিবার পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিনি সিলেটে যান। সার্বিক বিষয় নিয়ে প্রথম আলো কথা বলেছে তাঁর সঙ্গে।

প্রশ্ন:

প্রথম আলো: নতুন রাজনৈতিক দল করেছেন। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় দলের ভবিষ্যৎ কী?

রেজা কিবরিয়া: দেশের উত্তরণ ঘটানোর জন্য আমরা রাজনৈতিক দল করেছি। এখন তো গণতান্ত্রিক কোনো অধিকার দেশে নেই। বাক্‌স্বাধীনতা নেই। সাংবাদিকদের স্বাধীনতা নেই। যেকোনো মৌখিক বিরোধিতাও সরকার বন্ধ করে দিয়েছে, রাস্তায় নামা তো দূরের কথা। বিএনপিকে তারা যেভাবে আক্রমণ করছে, এতে বোঝা যায় এই সরকারের গণতান্ত্রিক বিন্দুমাত্র চেতনা নেই। এটা থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের অনেক বড় কাজ করতে হবে।

আমাদের প্রথম কাজ জনগণকে ভোটের অধিকার ফেরত দেওয়া। অন্য সব দল দাবি করেছে, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়া। এটা আমাদেরও প্রথম দাবি। এটার বিকল্প হলো জাতিসংঘের অধীনে একটা নির্বাচন দেওয়া। এটা জাতিসংঘ করে। যেসব দেশে গণতান্ত্রিক অবকাঠামো বিভিন্ন কারণে ভেঙে গেছে, তারা (জাতিসংঘ) এ ধরনের নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নেয়। এটা সরকার চাইবে কি না, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। এটা জনগণ চায় এবং ইনশা আল্লাহ জনগণের দাবি মানুষের সামনে তুলে ধরে মানুষকে একত্র করে আমরা আদায় করব।

প্রশ্ন:

শোনা যাচ্ছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আপনারা ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবেন...

রেজা কিবরিয়া: আমরা এই মুহূর্তে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা করছি। তবে পরিস্থিতি তো নির্বাচনের সময় ভিন্ন হতে পারে। তখন আমরা চিন্তা করব।

প্রশ্ন:

অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোট বেঁধে নির্বাচনে যাওয়ার পরিকল্পনা আপনাদের আছে?

রেজা কিবরিয়া: সেটা নিশ্চয়ই আমরা কনসিডার করব। যদি আমাদের মনে হয় প্রয়োজন, তাহলে করব। যদি মনে হয়, আমরা এককভাবে করব, তাহলে সেটাই করব। আমরা কারও দিকে চেয়ে থাকব না যে অমুক না এলে বা অমুকের সঙ্গে না গেলে আমরা নির্বাচন করতে পারব না। এই ধরনের চিন্তা আমাদের নেই। তবে ২০১৮ সালের মতো নির্বাচনে আমরা যাব না।

প্রশ্ন:

৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার মতো সাংগঠনিক শক্তি আপনাদের আছে?

রেজা কিবরিয়া: এই মুহূর্তে আমাদের ৩০০ আসনে প্রার্থী চিহ্নিত হননি। কিন্তু সাংগঠনিক কাজ সব আসনে হয়ে গেছে। সারা দেশে আমাদের কমিটি আছে। আমরা জাতীয় রাজনীতি করব, এটা তার লক্ষণ। আমরা প্রার্থী পেয়ে যাব। অনেক সিনিয়র লোকজন আসছেন। আর যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য এমন তরুণ প্রার্থীদের বেছে নেব। সংসদে যাওয়ার বয়সটা কমাতে হবে, তরুণদেরই যেতে হবে।

প্রশ্ন:

আপনার বাবা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ ও অর্থমন্ত্রী। আপনি গণফোরামে যোগ দিয়ে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছেন। এখন নতুন দল করলেন। কতটুকু সফল হবেন?

রেজা কিবরিয়া: আমি মনে করি, সফল তো হবই। আমাদের পেছনে জনগণ থাকলে সফলতা না পাওয়ার কোনো কারণ নেই। এই রাজনৈতিক যুদ্ধে ব্যর্থতার জন্য তো আমি একটা ভালো চাকরি ছেড়ে এখানে আসিনি।

প্রশ্ন:

আপনাকে ধন্যবাদ।

রেজা কিবরিয়া: প্রথম আলোর পাঠকদেরও ধন্যবাদ।