আর্থসামাজিক উন্নয়নে দ্রুত এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ

আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে উন্নয়নের মাপকাঠিতে এখন দ্রুত এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। মজবুত হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। গতকাল সোমবার কলকাতায় এক সেমিনারে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ ও ভারতের সরকারি পর্যায়ের শীর্ষ ব্যক্তি এবং বাণিজ্যসংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ উপহাইকমিশন এবং কলকাতার মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি। আলোচকেরা বাংলাদেশের আরও মজবুত অর্থনীতি কামনা করে অচিরেই উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
কলকাতার একটি অভিজাত হোটেলে ওই সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারের শিরোনাম ছিল ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে বাংলাদেশের অভিযাত্রা: বাংলাদেশ-ভারত অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা’। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী। সম্মানিত অতিথি ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের ক্রেতা সুরক্ষা ও উপভোক্তামন্ত্রী সাধন পান্ডে। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইকোনমিক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জামালুদ্দিন আহমেদ, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্টের পরিচালক রাজা গোপাল ধর চক্রবর্তী, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম প্রমুখ।
সম্মানিত অতিথির ভাষণে পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী সাধন পান্ডে বলেন, ‘জাতিসংঘ বাংলাদেশকে স্বল্প উন্নয়ন দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পদার্পণের ঘোষণা দেওয়ায় আমি খুশি। বাংলাদেশ আমাদের প্রতিবেশী এবং বন্ধুত্বপূর্ণ এক দেশ। বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের রয়েছে ঐতিহাসিক এক নিবিড় সম্পর্ক। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং সেদিনকার ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী আর বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর অবদান এখনো আমাদের চেতনায় বহমান। সেই বাংলাদেশ আজ জাতিসংঘ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পদার্পণ করার স্বীকৃতি পাওয়ায় আমিও গর্বিত। এই ঘোষণার ফলে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথ আরও প্রশস্ত হবে। উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় আমাদের সহযোগিতা করছে। সে দেশে সন্ত্রাসবাদীদের ঠাঁই দিচ্ছি না। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশে গ্যাসের ভান্ডারসহ শিল্প গড়ার নানা কাঁচামাল ও অবকাঠামো রয়েছে। তিনি আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনা ফের ক্ষমতায় আসবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী বলেন, বাংলাদেশ উন্নত হওয়ার লক্ষ্যে দ্রুত এগিয়ে চলছে। ২০২৪ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও মজবুত হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশের তিনটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভারতীয় শিল্পপতিদের বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছে। এই তিনটি অর্থনৈতিক অঞ্চল হলো মোংলা, ভেড়ামারা ও মিরসরাই।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে কলকাতার মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট রমেশ আগরওয়াল বলেন, ‘আমাদের দ্বিপক্ষীয় উন্নয়নের লক্ষ্যে দুই দেশে আরও ছয়টি সীমান্ত হাট খোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই ছয়টি হাটের মধ্যে চারটি মেঘালয়ে এবং দুটি ত্রিপুরায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে স্থাপিত হবে। যদিও এখন মেঘালয় ও ত্রিপুরায় দুটি করে সীমান্ত হাট চালু রয়েছে।
অন্যদিকে কলকাতা উপহাইকমিশনারের পক্ষে স্বাগত বক্তব্য দেন কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার তৌফিক হাসান। তিনিও বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার কথা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনও বারবার উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। অচিরেই সেই সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।