আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড চেয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ

প্রতীকী ছবি

রাজধানীর বনানীর রেইনট্রি হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ মামলার আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড চেয়ে যুক্তিতর্ক শেষ করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। আসামিপক্ষ থেকে যুক্তিতর্ক শুনানি আংশিক শেষ হয়েছে।

১২ সেপ্টেম্বর আসামিপক্ষের বাকি যুক্তিতর্ক শুনানির দিন ঠিক করেছেন আদালত। আজ রোববার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক কামরুন্নাহার দিনটি ঠিক করেন।

সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আফরোজা ফারহানা আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছে। আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড চাওয়া হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হওয়ায় এদিন আসামি নাঈম আশরাফের পক্ষে যুক্তিতর্ক শুনানি শুরু করেন আইনজীবী এ বি এম খায়রুল হক।

এ মামলায় ৪৭ সাক্ষীর মধ্যে ২১ জনকে আদালতে হাজির করা হয়। গত ২৯ আগস্ট এ মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানিতে মামলার পাঁচ আসামি নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছিলেন। আলোচিত এ ধর্ষণ মামলায় ২০১৭ সালের ১৩ জুলাই প্রধান আসামি শাফাত আহমেদসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। অপর চার আসামি হলেন শাফাত আহমেদের বন্ধু সাদমান সাকিফ, নাঈম আশরাফ, শাফাতের দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন। পাঁচ আসামিই জামিনে মুক্ত আছেন।

২০১৭ সালের ২৮ মার্চ রাতে রেইনট্রি হোটেলে জন্মদিনের পার্টির কথা বলে ডেকে নিয়ে দুই তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে বনানী থানায় মামলা হয়। মামলায় বলা হয়, হোটেলে আসার পর সেখানে পার্টির পরিবেশ না দেখে বাদী ও তাঁর বান্ধবী চলে যেতে চান। সে সময় শাফাত আহমেদ তাঁদের কেক কাটার পর যাওয়ার অনুরোধ করেন। তখন বাদী ও তাঁর বান্ধবী ছাড়াও তাঁদের এক চিকিৎসক বন্ধু ও তাঁর বান্ধবী সেখানে ছিলেন। তাঁরা সবাই চলে যেতে চাইলে শাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ বাদীর চিকিৎসক বন্ধুকে অকথ্য ভাষায় গালাগালসহ মারধর করেন এবং গাড়ির চাবি ছিনিয়ে নেন। এ ছাড়া তাঁদের (চিকিৎসক ও তাঁর বান্ধবী) একটি কক্ষে আটকে রেখে ভয়ভীতি দেখান। তারপর শাফাত ও নাঈম বাদী ও তাঁর বান্ধবীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। গাড়িচালক বিল্লাল বাদীর চিকিৎসক বন্ধুকে মারধরের ভিডিও ধারণ করেন।

আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আসামি শাফাত বলেন, বাদীর সঙ্গে জন্মদিনের সপ্তাহ দুয়েক আগে তাঁর পরিচয় হয় সাদমান সাকিফের মাধ্যমে। দ্রুত তাঁরা বন্ধু হয়ে ওঠেন। তিনি দাবি করেন, বাদীর পছন্দে তিনি রেইনট্রি হোটেলে জন্মদিন পালনের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি দুটি কক্ষ বুকিং দিয়েছিলেন। ২৮ মার্চ রাতে তাঁরা মদ্যপান করে বেসামাল অবস্থায় ছিলেন। পরে বাদীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন।

আসামি নাঈম আশরাফ জবানবন্দিতে বলেন, জন্মদিনের অনুষ্ঠানে বিকেল থেকে দুজন নারী ছিলেন। পরে তাঁদের অনুরোধে আরও একজন বাড্ডা থেকে যোগ দেন। ধর্ষণের শিকার দুই নারী ও তাঁদের বন্ধুরা হোটেলে আসেন রাত নয়টা থেকে সাড়ে নয়টার দিকে। অতিথিদের একজনকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে তিনি হোটেলে ফেরেন রাত দেড়টার দিকে। তিনি ভালো বন্ধু হওয়ার কথা বলে জোর করে বাদীদের একজনের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেন। বাদী তাতে আপত্তি জানালেও নাঈম জোর করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন।