ইউএনও ‘অ্যাকটিভ’ কি না, পরীক্ষা করতে তরুণের কাণ্ড

৩৩৩ নম্বরে খাদ্যসহায়তা চেয়ে ফোন করেন দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র শাহাদাত সাকিব (১৯)। ফোন পেয়ে খাদ্যসহায়তা নিয়ে ২০ কিলোমিটার দূরে নৌকা ও অটোরিকশার চড়ে সাকিবের বাসায় পৌঁছান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। গন্তব্যে পৌঁছে ইউএনও ও অন্যরা বুঝতে পারেন যিনি কল দিয়েছেন সেই সাকিব তিনতলা একটি ভবনে থাকেন এবং ওই ভবন মালিকের ছেলে।

ইউএনও ওই তরুণের সঙ্গে কথা বলেন। ওই তরুণ ইউএনওকে জানান, খাদ্যসহায়তার জন্য তিনি কল করেননি। সরকারি কর্মকর্তাদের কার্যক্রম পরীক্ষা করে দেখতে তিনি এ কাণ্ড করেছেন। প্রশাসনের সঙ্গে এমন একটি হয়রানিমূলক ঘটনা ঘটালেও ওই তরুণকে বয়স কম হওয়ায় কোন শাস্তি দেননি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন। তাঁকে ভবিষ্যতে এ রকম ভুল আর না করতে সতর্ক করেছেন ইউএনও।

সোমবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার উত্তর মাদার্শা ইউনিয়নের পশ্চিম বাড়িয়াঘোনা গ্রামে। শাহাদাত সাকিব ওই গ্রামের মো. জাফরের ছেলে। তিনি স্থানীয় আকবরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র।
হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ওই তরুণের পরিবারের ত্রাণের দরকার ছিল না। তাঁদের পরিবার থেকে ত্রাণ দেওয়া হয় গরিব মানুষকে। তবুও শাহাদাত সাকিব নামের ওই তরুণ ৩৩৩ নম্বরে কল দেন। পরে ইউএনও খাদ্যসহায়তা নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আবার ফিরে আসেন।

যেই নম্বর থেকে শাহাদাত সাকিব ৩৩৩-এ কল দিয়েছিলেন সেটি সোমবার সন্ধ্যায় বন্ধ পাওয়া যায়।

উত্তর মাদার্শা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহেদ উল্লাহ বলেন, ছেলেটি একটি কলেজের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী। ইউএনও কল পেয়ে কী করেন, সেটা পরীক্ষা করতে নাকি তিনি এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন।

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ রুহুল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, শাহাদাত সাকিব জানিয়েছেন তাঁদের ত্রাণের দরকার নেই। তাঁরাই উল্টো ত্রাণ দেন মানুষকে। ইউএনও ত্রাণ আনেন কি না, ওই নম্বরটি আসল না নকল, সেটি পরীক্ষা করতে তিনি কল করেছেন। ইউএনও বলেন, ‘সাবিক বলেছেন হাটহাজারীর ইউএনও অ্যাকটিভ কি না, সেটা বুঝতে এই কাজ করেছেন। সরকারি সেবা নিয়ে এ রকম কল দেওয়া ঠিক হয়েছে কি না, জানতে চাইলে সাকিব আমাদের বলেছেন, ভুল হয়েছে আমি অনুতপ্ত।’