ইউপি ভবন নির্মাণ ঝুলে আছে সাড়ে তিন বছর

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ডাঙ্গি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নতুন ভবন নির্মাণ ঝুলে আছে সাড়ে তিন বছর ধরে। এই সময়ের মধ্যে ইউনিয়নের দুই প্রান্তে দুটি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, বর্তমান ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরোধের কারণে ভবনটি নির্মাণের কাজ এত দিনেও শুরু হয়নি।
সর্বশেষ ৮ মার্চ ডাঙ্গি ইউনিয়নের দক্ষিণ প্রান্ত ভুবুকদিয়া এলাকার ফাঁকা জায়গায় ইউপি কমপ্লেক্স ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন জাতীয় সংসদের উপনেতা ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা, সালথা) আসনের সাংসদ সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। তিনি এর আগে ২০১৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ইউনিয়নের উত্তর প্রান্তে বিলগোবিন্দপুর এলাকায় ইউপি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ভবন নির্মাণ করা নিয়ে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ ও সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান সরদারের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। তাঁরা চান নিজ নিজ বাড়ির কাছে নতুন ভবনটি নির্মাণ করা হোক। যদিও দুজনের বাড়ি ইউনিয়নের দুই প্রান্তে, চার কিলোমিটারের ব্যবধানে।
ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২৪ দশমিক শূন্য ৩ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ভাঙ্গি ইউপি ১৯টি গ্রাম নিয়ে গঠিত। লোকসংখ্যা প্রায় ২৬ হাজার।
প্রায় ৭০ বছরের পুরোনো ইউপি ভবন অবস্থিত বিলগোবিন্দপুর এলাকায়। এই এলাকায় কৃষি ব্যাংক, ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়, ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এবং একটি প্রাথমিক ও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব দিক বিবেচনা করে ২০১৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর বিলগোবিন্দপুরে নতুন ইউপি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এ জন্য সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের পরিবারের পক্ষ থেকে ৫০ শতাংশ জমি সরকারকে লিখে দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। এতে সেখানে ভবন নির্মাণে স্থগিতাদেশ দেন আদালত।
জানতে চাইলে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান সরদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘পরিপত্র অনুযায়ী পুরোনো ইউপি ভবনের কাছে এবং যেখানে ব্যাংক, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ভূমি অফিস রয়েছে, এমন সুবিধাজনক জায়গায় নতুন ভবন নির্মাণ করার কথা। এ জন্য আমার পরিবারের পক্ষ থেকে ৫০ শতাংশ জমি দেওয়া হয়।’
বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিলগোবিন্দপুর ও ভুবুকদিয়া দুই মৌজাই ইউনিয়নের দুই প্রান্তে অবস্থিত। তবে তুলনামূলকভাবে ভুবুকদিয়া কিছুটা ভেতরে। তাই ভুবুকদিয়ায় নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে। এ জন্য এলাকাবাসী ৪২ দশমিক ৫০ শতাংশ জমি সরকারকে দিয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল আজিজ বলেন, মামলার কারণে ডাঙ্গি ইউপি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেও বিলগোবিন্দপুরে ভবন নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। এখন ভুবুকদিয়ায় ইউপি ভবন নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে কারণে দ্বিতীয় দফায় ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা কার্যালয়ের প্রকৌশলী সানাউল হক বলেন, এখনো ওই জায়গার মাটি পরীক্ষা করা হয়নি। ভবনের নকশা করা হয়নি। ভবন নির্মাণে কত টাকা ব্যয় হবে এবং কত দিনে কাজ শেষ হবে, তা এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়।