ই-টিকিটিং সেবা নিয়ে অভিযোগ

রেলগাড়িতে যাতায়াতের কথা ভাবতেই এর টিকিটের দুষ্প্রাপ্যতার কথা মাথায় আসে। যাত্রীরা সহজে টিকিট পাবেন এই কথা বলে রেল কর্তৃপক্ষ ই-টিকিটিং ও মুঠোফোনে টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা চালু করেছিল। তবে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভির রেলের টিকিট সেবা নিয়েও এখন নানা অভিযোগ উঠছে। 
হাফিজুর রহমান পড়েন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। থাকেন পুরান ঢাকার মাহুতটুলীতে। গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় তাঁর সঙ্গে কমলাপুর রেলস্টেশনে কথা হয়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল ভোরে তিনি www.esheba.cnsbd.com ওয়েবসাইটটিতে নিবন্ধনের জন্য চেষ্টা করেন। এক ঘণ্টা চেষ্টার পর নিবন্ধন করতে পারলেও শেষ পর্যন্ত টিকিট নিতে পারেননি। এরপর চলে আসেন কমলাপুরে। দাঁড়িয়ে যান টিকিটের সারিতে।
বাংলাদেশ রেল কর্তৃপক্ষ তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর টিকিটিং ব্যবস্থা চালু করে ২০১২ সালের ২৯ মে। অনলাইনে ই-টিকিট কিনতে প্রথমে নিবন্ধন করতে হবে www.esheba.cnsbd.com সাইটে। নিবন্ধন-প্রক্রিয়া শেষে সাইটটিতে লগইন করে ক্লিক করতে হবে Purchase Ticket অংশে। এরপর ভ্রমণের তারিখ, যাত্রা শুরুর স্থান, গন্তব্য, ট্রেনের নাম, আসনের শ্রেণি, টিকিটের সংখ্যা নির্বাচন করে ‘সার্চ’ ক্লিক করতে হবে। আসন খালি থাকলে টিকিট কেনার পরবর্তী ধাপ শেষ করতে হবে। ভাড়া পরিশোধ করা যাবে ভিসা কার্ড, ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড দিয়েই। ই-টিকিটিং প্রক্রিয়া শেষে প্রদর্শিত পাতাটি প্রিন্ট করে স্টেশনের নির্ধারিত বুথে জমা দিলেই পাওয়া যায় মূল টিকিট। অনলাইনের পাশাপাশি মোবাইল ফোন থেকে এসএমএসের মাধ্যমেও টিকিট কেনা যায়। ঢাকার কমলাপুর ও বিমানবন্দর, রাজশাহী এবং চট্টগ্রাম স্টেশনে ই-টিকিটিং সেবা দেওয়ার বুথ রয়েছে।
গতকাল সকালে কমলাপুরে টিকিট কিনতে আসা নয়ন, বারী ও সোহেল নামের তিন শিক্ষার্থী জানান, তাঁরাও দীর্ঘক্ষণ চেষ্টার পরও রেলের দেওয়া ওয়েবসাইটে ঢুকতে পারেননি।
কাইয়ুম হোসেন নামের যাত্রী দাবি করেন, মুঠোফোনে টিকিট কিনতে অভিজ্ঞতার দরকার হয়। অনেক চেষ্টায় তিনি টিকিট হাতে পান। তাঁর মুখে ছিল হাসি।
তবে আল-আমিন হক নামের টিকিটপ্রত্যাশীর অভিযোগ ভিন্ন। তিনি বলেন, অনলাইনে কিংবা এসএমএসের মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহের পরও লাইনে দাঁড়িয়ে মূল টিকিট সংগ্রহ করতে হয়। তাহলে এত ঝামেলা করার কী দরকার!
এ ব্যাপারে রেলের মহাপরিচালক তাফাজ্জল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের খারাপ লাগে, যখন দেখি অনলাইনে ফরম পূরণের পর মানুষকে স্টেশনে আসতে হয়। স্টেশনে না এসে টিকিট সংগ্রহের বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে।’
স্টেশনে দেখা যায়, অনলাইন ও খুদে বার্তার মাধ্যমে দেওয়া টিকিটের সারি ছোট। টিকিট কিনতে আসা কেউ কেউ অভিযোগ করেন, অনলাইন ও খুদে বার্তার মাধ্যমে কম টিকিট সরবরাহ করা হয়। তাঁরা টিকিটের সংখ্যা বাড়ানোর কথা বলেন।
আসন্ন ঈদ উপলক্ষে গত পরশু থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। গতকালও সারা দিন কমলাপুর রেলস্টেশনে টিকিটপ্রত্যাশী মানুষের উপচে পড়া ভিড়।