উত্তরায় বিজয় মেলা
উপলক্ষ বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। উৎসবের আমেজকে মাসজুড়ে প্রাণবন্ত রাখতে বাংলাদেশ ইউনাইটেড হ্যান্ডি ক্রাফট অ্যান্ড বুটিকসের উদ্যোগে উত্তরায় চলছে ‘বিজয় মেলা’। শেষ হবে ৩১ ডিসেম্বর।
উত্তরার সোনারগাঁও জনপদ অ্যাভিনিউয়ে বসেছে এই মেলা। প্রায় দুই বিঘা জায়গা নিয়ে সাজানো মেলা প্রাঙ্গণ। মেলায় আছে হরেক রকম দেশি পণ্যের ৬০টি স্টল ও দুটি প্যাভিলিয়ন।
গতকাল বৃহস্পতিবার মেলা ঘুরে দেখা গেছে, পেশাগত কাজে উত্তরায় বসবাস করেন এমন অনেক বিদেশি নাগরিকও মেলায় আসছেন। সব শ্রেণীর দর্শনার্থীদের আনাগোনায় মুখর মেলা প্রাঙ্গণ। অনেকেই আসছেন সপরিবারে, ছেলেমেয়েদের নিয়ে। লোকজন দোকানে-দোকানে ঘুরছেন, পছন্দসই জিনিস কিনছেন। উত্তরাসহ আশপাশের ইউনিয়ন থেকেও লোকে এখানে আসছেন। মেলায় শিশুদের বিনোদনের জন্য রাখা হয়েছে ‘গেমিং জোন’। বাচ্চারা সেখানে ট্রেনে চড়ছে, খেলনা গাড়ি চালাচ্ছে। কেউ কেউ নাগরদোলায় উঠছে, হস্তচালিত ঘোড়ায় সওয়ার হচ্ছে। কেউ কেউ দোকান ঘুরে-ঘুরে খেলনা কিনছে।
দর্শনার্থীদের একজন ফারহানা রিক্তা বলেন, ‘যৌথ পরিবারে থাকি, বাড়ির সব বাচ্চাদের নিয়ে এসেছি। ওদের নিয়ে ঘুরছি, কেনাকাটা করছি। ভালো লাগছে, ছেলেমেয়েরা আনন্দ পাচ্ছে।’
মেলায় মিলবে হাতে তৈরি মেয়েদের গয়না, শাড়ি, থ্রিপিস, ওড়না, নেকাব, বাচ্চাদের জামা-কাপড়, ছেলেদের শার্ট-প্যান্ট, কোটসহ বিভিন্ন পোশাক। বেশ কয়েকটি দোকানে বিক্রি হচ্ছে শীতবস্ত্র। তুলনামূলক কম দামে বিকোচ্ছে কম্বল, চাদরসহ নানা কিছু। আরও আছে ওভেন, পানির ফিল্টার, রাইসকুকার, কারিকুকার, ব্লেন্ডার মেশিন, রুটি মেকার, জুস মেকার, প্রেশারকুকার, দস্তা ও স্টিলের ফ্রাইপ্যান, সসপ্যান, হাঁড়ি-কড়াই, চামচ, ঢাকনা, থালা, গ্লাস, বাটিসহ রান্নার কাজে সহায়ক নানা উপকরণ। এ ছড়া আছে আকর্ষণীয় পোড়ামাটির পণ্য। চোখে পড়বে ঘর-সজ্জার বাহারি উপকরণ। আর চটপটি, ফুচকা, মিষ্টিসহ হালকা ও ভারী খাবারের দোকান তো আছেই।
বিক্রেতাদের একজন রুদমিলা বলেন, ‘মেয়েদের গয়না ও পোশাক দিয়েই দোকান সাজিয়েছি। বেশির ভাগ গয়নাই হাতে তৈরি। কেনাবেচা ভালোই হচ্ছে। মেলা উপলক্ষে সব পণ্যেই কম দাম রাখছি।’
আয়োজকেরা জানান, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ও বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে মেলা মাঠের চারপাশে বসানো হয়েছে ১০টি ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা। মেলা চলাকালীন এগুলো খোলা থাকে। মেলা প্রাঙ্গণ নিরাপদ রাখতে কয়েকজন পুলিশ সদস্যও সব সময় উপস্থিত থাকেন। মেলায় দর্শনার্থীবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখতে নিয়োজিত আছেন অতিরিক্ত ১২ জন নিরাপত্তাকর্মী।
মেলার উদ্যোক্তা দীপিকা মিত্র ও আয়োজকদের একজন এম এ রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিজয় উৎসব উদ্যাপনকে ভিন্নমাত্রা দিতেই আমাদের এই আয়োজন। মূলত এই মেলার মাধ্যমে আমরা দেশের ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প ব্যবসায়ীদের একত্রিত করে তাঁদের জন্য একটি ব্যবসাক্ষেত্র সৃষ্টি করে দিয়েছি।’
সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণ কাচবাতির আলোয় ঝলমলিয়ে ওঠে। মেলায় ঢোকা যাবে বিনা মূল্যে। খোলা সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা অবধি। এখানে আছে ত্রিমাত্রিক (থ্রিডি) ছবি দেখার ব্যবস্থা। সঙ্গে মিলবে উঁচু গোলাকার কক্ষে চোখধাঁধানো মোটরসাইকেল আর গাড়ির খেলা।