উদ্বোধনের অপেক্ষায়

ভৈরব ও আশুগঞ্জের মেঘনা নদীতে নির্মিত দ্বিতীয় ভৈরব রেলওয়ে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে এটি। পাশে (বাঁয়ে) দাঁড়িয়ে পুরোনো রেলসেতু l ছবি: প্রথম আলো
ভৈরব ও আশুগঞ্জের মেঘনা নদীতে নির্মিত দ্বিতীয় ভৈরব রেলওয়ে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে এটি। পাশে (বাঁয়ে) দাঁড়িয়ে পুরোনো রেলসেতু l ছবি: প্রথম আলো

কিশোরগঞ্জের ভৈরব ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের মধ্যে মেঘনা নদীতে নির্মাণাধীন ‘দ্বিতীয় ভৈরব রেলওয়ে সেতু’র কাজ প্রায় শেষ। নির্মাণ-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আশা, প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি পেলেই উদ্বোধনের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হবে।

সেতুটি খুলে দেওয়া হলে রাজধানীর সঙ্গে চট্টগ্রাম, সিলেটসহ পূর্বাঞ্চলীয় জোনে যাত্রীসেবা বাড়বে। বিশেষ করে যাত্রাপথে সময় কমে আসবে।

গত মঙ্গলবার গিয়ে দেখা যায়, ১২টি পিলারের মধ্যে ৮টি আছে নদীতে। ভৈরব ও আশুগঞ্জ প্রান্তে আছে আরও ৪টি। রং করা থেকে শুরু করে ছোটখাটো সব কাজ প্রায় শেষ। স্লিপার, রেললাইন নির্মাণ ও পাথর বসানোর কাজ অনেক আগেই করা হয়েছে। এ সেতুর সঙ্গে ভৈরব ও আশুগঞ্জ প্রান্তের ছয়টি ছোট সেতুও নির্মাণ শেষ হয়েছে।

প্রকল্প পরিচালক আবদুল হাই মুঠোফোনে বলেন, ‘সেতুর নির্মাণকাজ শেষ। সিগন্যালে কিছু কাজ বাকি ছিল। তা-ও শেষ প্রায়। আমরা এখন সেতুটি ট্রেন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার অপেক্ষায় আছি।’

প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয় সূত্র জানায়, রাজধানীর সঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-নোয়াখালীসহ পূর্বাঞ্চলীয় জোনে সরাসরি রেল যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করতে ১৯৩৭ সালে মেঘনা নদীতে প্রথম সেতুটি নির্মাণ করা হয়। রেলওয়ের যাত্রীসেবা বাড়াতে বর্তমানে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে ডাবল লাইন করার অংশ হিসেবে রেল মন্ত্রণালয় মেঘনা নদীতে আরও একটি সেতু নির্মাণ করতে উদ্যোগী হয়। নির্মাণাধীন সেতুটির নামকরণ করা হয় ‘দ্বিতীয় ভৈরব রেলওয়ে সেতু’।

এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৫৬৭ কোটি টাকা। এটি দৈর্ঘ্যে ৯৮৪ মিটার এবং চওড়ায় ৭ মিটার। সেতুতে ডুয়েল গেজ ও ব্রডগেজ উভয় সুবিধা রাখা হচ্ছে। অর্থের জোগান এসেছে ভারতীয় ঋণ সহায়তা (এলওসি ফান্ড) থেকে। এর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানও ভারতীয়। ইরকন-এফকনস জেভি নামে একটি কোম্পানি সেতুটি নির্মাণ করছে। ২০১৩ সালের ২৫ ডিসেম্বরে নির্মাণকাজ শুরু হয়। তিন বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও দুই দফায় সময় বাড়ানো হয়। সেতুর কাজ ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে শেষ হওয়ার কথা।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইট কার্যালয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে। ওই কার্যালয়ে গিয়ে ঊর্ধ্বতন কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ করা যায়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানো হয়েছে। সেতুটি এখন ট্রেন চলাচলের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।