এক্স-রে যন্ত্র পড়ে আছে দেড় বছর

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনটি দেড় বছর ধরে পড়ে রয়েছে। একটি যন্ত্রাংশ সংযোজন করতে না পারার কারণে আনার পর থেকে এটি চালু করা যায়নি বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এক্স-রে মেশিনটি চালু না থাকার কারণে হাসপাতালটির এক্স-রে বিভাগ বন্ধ রয়েছে। ফলে সেবা নিতে আসা গরিব রোগীরা এক্স-রে পরীক্ষা করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম খান গতকাল বৃহস্পতিবার বলেন, এক্স-রে মেশিনটি চালু করার জন্য তিনি দাপ্তরিকভাবে ও ব্যক্তিগতভাবে অনেক চেষ্টা করেছেন। এমনকি যন্ত্র সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের লোকজনের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছেন। কিন্তু কাজ হয়নি। অবস্থা এমন পর্যায়ে গেছে যন্ত্রটি অব্যবহৃত অবস্থায় থাকতে থাকতে এর মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বছর দেড়েক আগে রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত স্বাস্থ্য বিভাগের কেন্দ্রীয় সংরক্ষণাগার (সিএমএসডি) থেকে এখানে একটি ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন পাঠানো হয়। এরপর অনেক দেনদরবার করে মেশিনটি চালু করার জন্য একটি ‘স্ট্যাবিলাইজার’ যন্ত্র আনা হয়। কিন্তু যন্ত্রটি সংযোজন করার জন্য স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ থেকে এখন পর্যন্ত কাউকে পাঠানো হয়নি। এ কারণে মেশিনটি চালু করা যায়নি।

নথির বরাত দিয়ে সূত্রটি আরও জানায়, এক্স-রে মেশিন ও স্ট্যাবিলাইজারটি সরবরাহ করেছে ন্যাশনাল ইলেকট্রো মেডিকেল ওয়ার্কশপ (নিমো) নামের একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু চালু করার জন্য প্রতিষ্ঠানটি কাউকে পাঠায়নি। কমপ্লেক্স থেকে বারবার চিঠি ও ফোনে যোগাযোগ করা হলেও কাজ হচ্ছে না।

গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, মেশিনটি চালু না থাকায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে বিভাগটি তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। দরজায় সাঁটানো বিভাগটি বন্ধের নোটিশসংবলিত কাগজটি থেকে লেখা মুছে গিয়ে সাদা হয়ে পড়েছে।

মেডিকেল টেকনিশিয়ান (রেডিওগ্রাফার) মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, যন্ত্রটি সংযোজন করার জন্য ময়মনসিংহের স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের লোকজন এসে দেখে গেছেন। কিন্তু তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন। এখন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থেকে দক্ষ কাউকে না পাঠালে এক্স-রে মেশিনটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।

একই দিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির বহির্বিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে কথা হয় প্রায় ১৫ জন রোগীর সঙ্গে। তাঁদের মধ্যে চারজনকে এক্স-রে পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক। তাঁরা বলেন, বাইরে এক্স-রে করালে দ্বিগুণের বেশি খরচ হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও ময়মনসিংহ ৯ (নান্দাইল) আসনের সাংসদ মো. আনোয়ারুল আবেদিন খান বলেন, এক্স-রে মেশিনটি চালু করতে তিনি উদ্যোগ নেবেন।