সংক্রমণ পরিস্থিতি
এক সপ্তাহে মৃত্যু বেড়েছে ১৬ শতাংশ
১ হাজার ৪৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে গত সপ্তাহে। এর আগের সপ্তাহে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ২৭৭ জনের।
দেশে এক সপ্তাহ ধরে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন গড়ে দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে ১ জুলাই। আর সর্বশেষ (শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ২০৪ জনের। এর আগের (৪–১০ জুলাই) সপ্তাহের তুলনায় দেশে করোনায় মৃত্যু বেড়েছে ১৬ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, করোনা মহামারির দ্বিতীয় বছরের ২৮তম সপ্তাহে (চলতি জুলাই মাসের ১১ থেকে ১৭ তারিখ) ১ হাজার ৪৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ২৭৭ জনের। এক সপ্তাহের ব্যবধানে শনাক্তের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ। একই সময়ে নমুনা পরীক্ষা ২০ শতাংশ বেড়েছে। আর করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার হার বেড়েছে ৪১ শতাংশ।
বেশ কিছুদিন ধরেই অনেক রোগীর মৃত্যু হচ্ছে বাসায়। গত এক সপ্তাহে বাসায় মারা গেছেন ৯৩ জন করোনা রোগী। গতকালও দুজনের বাসায়
মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। দেশে এ পর্যন্ত ৪২১ জন করোনা রোগী হাসপাতালে আসার আগেই মারা গেছেন।
দেশে গত মে মাসের মাঝামাঝি থেকে নতুন করে করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। ১৪ জুন এটি ৩ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এরপর বাড়তে বাড়তে দেশে প্রথমবারের মতো এটি ১০ হাজার অতিক্রম করে যায় ৬ জুলাই। টানা ৬ দিন পর গতকাল শনাক্তের সংখ্যা ১০ হাজারের নিচে নেমেছে।
৫০ শতাংশের বেশি শনাক্তের হার ৭ জেলায়
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৮ হাজার ৪৮৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্ত কমলেও আগের দিনের তুলনায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার বেড়েছে। ২৪ ঘণ্টায় ২৯ হাজার ২১৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৯ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। এর আগের দিন শনাক্তের হার ছিল ২৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ১৩টি জেলায় করোনা শনাক্তের হার ৪০ শতাংশের বেশি ছিল গতকাল। এর মধ্যে ৭টি জেলায় শনাক্তের হার ৫০ শতাংশের বেশি। সর্বোচ্চ ৮১ শতাংশের করোনা শনাক্ত হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। রাঙামাটি, নাটোর, ঝিনাইদহ ও পিরোজপুরে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি। আর জয়পুরহাটে ২০টি ও পঞ্চগড়ে ১০টি নমুনা পরীক্ষা করা হলেও কারও করোনা শনাক্ত হয়নি। এ ছাড়া মাগুরা ও লালমনিরহাটে করোনা শনাক্তের হার ছিল ১০ শতাংশের কম।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ২০৪ জনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা জেলায়। এরপর কুমিল্লায় ১৫ জন, ফরিদপুরে ১২ জন, গাজীপুরে ১১ জন, কুষ্টিয়া ও যশোরে ১০ জন করে মৃত্যু হয়েছে করোনা আক্রান্ত হয়ে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা বোঝার একটি নির্দেশক হলো রোগী শনাক্তের হার। কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্ত ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। সেখানে গত ২৫ জুন থেকে টানা ২৩ দিন ধরে বাংলাদেশে রোগী শনাক্ত হচ্ছে ২০ শতাংশের বেশি হারে।