এক সড়কে অর্ধশতাধিক রেস্তোরাঁ

আগে ছিল হাতে গোনা কয়েকটি চায়নিজ রেস্তোরাঁ। এখন সেখানে রেস্তোরাঁর সংখ্যা প্রায় অর্ধশত। বছর কয়েকের মধ্যে ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডটি খাবারপাড়া হয়ে উঠছে। রেস্তোরাঁগুলোও বিভিন্ন স্বাদের খাবার ও সাজসজ্জায় নিজেদের মধ্যে ভিন্নতা আনার চেষ্টা করেছে।
মনিকা মোবাশ্বের বন্ধুদের নিয়ে নোম্যাডস রেস্তোরাঁতে খেতে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘এটা সম্পর্কে অনেক রিভিউ দেখেছি, লেকভিউ আছে এবং পরিবেশটাও ভালো।’
সাতমসজিদ রোডের ৫/এ-তে বিকল্প টাওয়ারের চতুর্থ তলায় নোম্যাডস রেস্তোরাঁ। লেকের দৃশ্য সরাসরি উপভোগ করা যায়। নানা স্বাদের থাই ও মঙ্গোলিয়ান খাবার পাওয়া যায়। রেস্তোরাঁটির হিসাব ব্যবস্থাপক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আগে এটা কার্ট (খাবারের ছোট গাড়ি) ছিল। গত বছরের আগস্টে রেস্তোরাঁ হিসেবে চালু হয়।’ এখানে মঙ্গোলিয়ান গ্রিলের চাহিদা বেশি। দাম ১৯৯ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া আরেকটি মঙ্গোলিয়ান খাবার মাকানানও জনপ্রিয়। এখানে ৪০ জনের বসার ব্যবস্থা আছে। দুপুর ১২টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
বিকল্প টাওয়ারেরই সপ্তম তলায় আছে খোলা ছাদবিশিষ্ট অরিগানো রেস্তোরাঁ। এ বছরের জানুয়ারিতে এটি চালু হয়। পাওয়া যায় সামুদ্রিক ও স্প্যানিশ খাবার। রেস্তোরাঁর একজন পরিবেশনকারী জানান গ্রিলড সি-ফুডের চাহিদা বেশি। দাম ৫৪০ থেকে ১৯৩০ টাকা পর্যন্ত। বেলা ১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকে। এর পাশেই আছে চিজউইক রেস্তোরাঁ।
বার্গারের জন্য বেশ জনপ্রিয় ধানমন্ডির ৯/এ-এর কেবি স্কয়ারের ম্যাডশেফ। নাগা ব্লাস্ট, ম্যাদাম লুসি, ঢাকাইয়া বার্গারের চাহিদা অনেক। দাম ২২০ থেকে ৪১০ টাকা। কেবি স্কয়ারেই আরও কিছু রেস্তোরাঁ আছে। ক্যাফে হ্যালো ধানমন্ডি, ফ্লেভারস মিউজিক ক্যাফে গুহা, ভেপিয়ানো, ভ্যাম্পায়ার ক্যাফে এবং খোলা ছাদের দ্রুম। এখান থেকে কয়েক পা এগোলেই ১০/এ-তে আছে রুপায়ণ জেড আর প্লাজা। এই ভবনেও এক বছরের মধ্যে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু রেস্তোরাঁ। এখানে আছে হান্ডি, হ্যাঙ আউট, শর্মা কিং এবং রেড ফ্লেম। বিকেল থেকেই ভবনটিতে ভোজনরসিকদের আনাগোনা বেড়ে যায়।
২০১৫ সালের নভেম্বরে ধানমন্ডি ৩/এ-তে যাত্রা শুরু করে আলফ্রেসকো। থাই ও চায়নিজ খাবার পাওয়া যায়। এর ব্যবস্থাপক সাইফুদ্দিন খান বলেন, ‘আমাদের পিৎজা ও পাস্তাটা বেশি চলে।’ বিভিন্ন সাইজের পিৎজা পাওয়া যাবে ২৯০ থেকে ৭৫৫ টাকায়। এ ছাড়া পাস্তা পাওয়া যাবে ২৮৫ থেকে ২৯৫ টাকা পর্যন্ত।
আলফ্রেসকোর পাশেই আছে চাপ সামলাও। বাংলা সিনেমার পোস্টার ও পেইন্টিং দিয়ে সাজানো হয়েছে রেস্তোরাঁটি। কত ধরনের চাপ আছে তাও দেখা যাবে দেয়ালে টানানো ছবিতে। খাবারের তালিকায় বিফ ও চিকেন চাপের সঙ্গে আছে মাছের চাপ। নানা ধরনের প্যাকেজ মিলবে ২৩৫ থেকে ৩৩৫ টাকায়।
লেকের পাশে বসে খাওয়ার জন্য আছে ট্রায়াঙ্গেল ক্যাফে। ধানমন্ডির ৩/এ সড়কটি ধরে লেকের দিকে এগোলে হাতের ডানদিকে পড়বে রেস্তোরাঁটি। খোলা জায়গায় ভিন্ন ধাঁচের সাজসজ্জা এবং কোলাহলমুক্ত পরিবেশে লেকের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে। বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারদিন শাহরিয়ারের লেকে ঘুরতে গিয়ে এই রেস্তোরাঁটি চোখে পড়ে। বললেন, ‘এর লোকেশনটা ভালো লেগেছে। তাই বসে পড়লাম।’ চায়নিজ খাবার পাওয়া যায়। দাম পড়বে ১৪৯-১০০০০ টাকা পর্যন্ত।
শংকরের পাশেই আছে থাই, চায়নিজ ও সি-ফুডের রেস্তোরাঁ নস্টালজিক ক্যাফে। শংকর থেকে একটু সামনে শেখ কামাল ক্রীড়া চক্রের বিপরীত দিকে আছে জিএইচ হাইটস ভবন। এর প্রতিটি তলাতেই আছে রেস্তোরাঁ। কফিশপ হিসেবে বেশ জনপ্রিয় গ্লোরিয়া জিনস আছে দ্বিতীয় তলায়। এখানে নানা স্বাদের কফি পাওয়া যাবে। এখানে আছে হাসপাতাল থিমের রেস্তোরাঁ ক্রাইস কার্ডিয়াক গ্রিল। বারবিকিউ বাংলাদেশ, ফুড রিপাবলিক, কমিক ক্যাফে, দিল্লি দরবার, সাবরোসো, ক্যাফে গ্যাসুলিন এবং দ্য ওরিয়েন্টাল স্কাই লাউঞ্জ।
এ ছাড়া এখানে আছে ফাস্ট ফুডের জনপ্রিয় আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড কেএফসি, পিৎজা হাটের শাখাও আছে এখানে। আরও আছে স্টার কাবাব ও জিং লিংয়ের মতো পুরোনো ও জনপ্রিয় রেস্তোরাঁ। আরও আছে কড়াই গোস্ত, বাবুর্চি, বেলা ইতালিয়া।
আইসক্রিম পার্লারও আছে এ রোডে—ক্রিম অ্যান্ড ফাজ, ক্লাব জেলেতো ও মুভ এন পিক। এ ছাড়া ডোনাটসের জন্য রয়েছে গ্লেজড এবং ব্রেড অ্যান্ড বিয়ন্ড নামে কফিশপ।