এগিয়ে যাচ্ছে বিশেষ শিশু-কিশোরদের স্কুল 'প্রয়াস'
অটিজম সমস্যাগ্রস্ত সামিরা পাঁচ বছর বয়সেও কথা বলতে পারত না। ২০১০ সালে তাকে ঢাকা সেনানিবাসের সেনা সহায়ক স্কুল প্রয়াসে ভর্তি করা হয়। অস্থির সামিরা শ্রেণিকক্ষেই বসত না, কাঁদত ও ছোটাছুটি করত। স্কুলে আসার পর ধীরে ধীরে তার উন্নতি হতে থাকে। গত মে মাসে সামিরা কথা বলতে শুরু করে। এখন সে লিখতেও পারে।
শুধু সামিরা নয়, সেরিব্রাল পলসি, শারীরিক, বুদ্ধি, দৃষ্টি, বাক ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী শিশু-কিশোরেরা প্রয়াসে আসার পর মানসিক বিকাশে আশানুরূপ উন্নতি হয়েছে। এদের কেউ কেউ প্রায় স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে শিখেছে। গতকাল রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রয়াসের অধ্যক্ষ ও নির্বাহী পরিচালক কর্নেল মো. শহীদুল আলম এসব জানান। বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রয়াসের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় একটি প্রামাণ্য চিত্রও দেখানো হয়। ঢাকা সেনানিবাসে প্রয়াস স্কুলের মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
অধ্যক্ষ বলেন, ২০০৬ সালে বিশেষ শিশুদের জন্য তৎকালীন সেনাপ্রধান সেনা সহায়ক স্কুল চালু করেছিলেন। পরে ২০১০ সালে সামরিক ও বেসামরিক বিশেষ শিশুদের জন্য সেনা সহায়ক স্কুলের নাম প্রয়াস রাখা হয়। এই বিদ্যালয়ে জাতীয় পাঠ্যক্রমের কর্মসূচি অনুযায়ী প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা, ব্রিটিশ পাঠ্যসূচি অনুযায়ী ইনক্লুসিভ ইংরেজি মাধ্যম, কারিগরি ও ভকেশনাল শিক্ষা চালু রয়েছে।
শহীদুল আলম বলেন, প্রয়াসের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো শিশুদের সর্বোত্তম বিকাশ নিশ্চিত করা। এ জন্য তাদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম রয়েছে। ঢাকার বাইরে সাভার, চট্টগ্রাম, যশোর, বগুড়া, কুমিল্লা, রংপুর, ঘাটাইল, রাজশাহী, কক্সবাজারের রামু, রাজশাহী ও সিলেটে প্রয়াসের শাখা স্কুল রয়েছে। প্রয়াস স্বেচ্ছাসেবী অলাভজনক ও অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। ঢাকার প্রয়াস স্কুলে চার শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের জন্য রয়েছে ১২৬ জন শিক্ষক, ২৫ জন থেরাপিস্ট, ২ জন চিকিৎসক, ২ জন সাইকোলজিস্ট ও ৬৬ জন শ্রেণি সহকারী।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রয়াসের উপাধ্যক্ষ কাজী আফরোজা সুলতানা, আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালক লে. কর্নেল মোহাম্মদ রাশিদুল হাসান ও সহকারী পরিচালক মো. নূর ইসলাম।