লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার প্রশাসন কৌশল পাল্টে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে আটটি ‘বোমা মেশিন’ ধ্বংসের পাশাপাশি এক ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠিয়েছে। উপজেলায় অবৈধ বোমা মেশিন দিয়ে অভিনব ‘রাতচোরা’ কৌশলে দীর্ঘদিন ধরে পাথর-বালু উত্তোলন করে আসছিলেন এসব মেশিনের মালিকেরা।
এ নিয়ে গত সোমবার প্রথম আলোয় বোমা মেশিন দিয়ে ‘রাতচোরা’ কৌশলে পাথর-বালু উত্তোলন শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। পরে খোঁজ নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সত্যতা পায় উপজেলা প্রশাসন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূর কুতুবুল আলম বলেন, ‘মেশিনের মালিক ও ব্যবসায়ীরা পাথর উত্তোলনে যত কৌশলই করুক না কেন, সেই কৌশলকে ধরতে আমরাও কৌশল পাল্টিয়ে এখন রাতে অভিযান অব্যাহত রাখব।’
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত বুধ ও বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে ইউএনও নূর কুতুবুল আলম থানার একদল পুলিশ সদস্য নিয়ে পাটগ্রাম সদর ইউনিয়নের ব্যাংকান্দা, কুড়ারপাড়, কাউয়ামারী এবং বুড়িমারী ইউনিয়নের বানিয়ারডাঙ্গি, মাশানটারী ও উফারমারা গ্রামের ধরলা নদীতে অভিযান চালান। এ সময় তিনি আটটি মেশিনসহ পাথর পরিবহনের একটি ট্রাক্টর জব্দ করেন। পরে সব মেশিন ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রাংশ নষ্ট করে খাদে ফেলে নিশ্চিহ্ন করা হয়। এ সময় অভিযানের খবর পেয়ে মেশিনের মালিকেরা সটকে পড়লেও পাথর উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সেলিম হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাঁকে তিন দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। এ ছাড়া জব্দ করা ট্রাক্টরটি থানায় জমা দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার ঝাকুয়াটারি ও ব্যাংকান্দা গ্রামের চার ব্যক্তি জানান, বোমা মেশিনের মালিক ও ব্যবসায়ীরা ভীষণ দাপুটে। তাঁদের দাপটে এলাকাবাসী অসহায়। প্রশাসনের অভিযানের কারণে তাঁরা নানা কৌশলে মেশিন চালান। তাঁরা দিনে নয়, কৌশল পাল্টে নদীতে ভাসমান স্থাপনা বসিয়ে বোমা মেশিন দিয়ে রাতে পাথর ও বালু তুলছেন। তবে প্রশাসন নিয়মিত রাতে অভিযান চালালে নদীর পাশাপাশি এলাকার আবাদি জমিও রক্ষা পাবে।
ইউএনও নূর কুতুবুল আলম গতকাল শুক্রবার বেলা তিনটার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিসহ নয়জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের হয়েছে। এসব অবৈধ মেশিন উচ্ছেদে রাতে অভিযান জোরদার করা হয়েছে। নদী থেকে সব বোমা মেশিন উচ্ছেদের জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসন বদ্ধপরিকর।