এবার চোখের কৃত্রিম লেন্সের সর্বোচ্চ খুচরা দাম ঠিক হচ্ছে
হৃদ্রোগ চিকিৎসার স্টেন্টের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) নির্ধারণের পর ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এবার চোখের কৃত্রিম লেন্সের এমআরপি ঠিক করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১১টি ব্র্যান্ডের লেন্সের দাম ঠিক হয়েছে বলে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা স্টেন্টের এমআরপি ঠিক করেছি। এখন লেন্সের এমআরপি ঠিক করছি। অন্যান্য চিকিৎসাসামগ্রীর এমআরপি ঠিক করার কাজে হাত দেব। সরকারি আইন ও নীতি মেনেই এমআরপি ঠিক করা হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এমআরপি, নিবন্ধন নম্বর, প্রস্তুতকারক দেশের নাম এবং মেয়াদ উল্লেখ থাকলে চিকিৎসাসামগ্রী কেনাবেচায় স্বচ্ছতা আসবে। এতে বেশি লাভবান হবে দরিদ্র রোগীরা।’
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলছেন, মানুষের চোখে ছানি পড়লে দেখতে সমস্যা হয়। অস্ত্রোপচার করে এই ছানি সরানো হয়। এরপর কৃত্রিম স্বচ্ছ লেন্স প্রতিস্থাপন করা হয়, যা ইন্ট্রাঅকুলার লেন্স নামে পরিচিত। এর মাধ্যমে রোগী আগের মতো পরিষ্কার দেখতে পান।
অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, দেশে ১৭টি ব্র্যান্ডের লেন্সের (ইন্ট্রাঅকুলার লেন্স) নিবন্ধন আছে। কিন্তু হাজারের মতো নিবন্ধনহীন আরও অনেক ব্র্যান্ড ব্যবহার করা হচ্ছে। বিদেশ থেকে আমদানি করা লেন্সের ১১টি ব্র্যান্ডের এমআরপি ঠিক হয়েছে। এগুলো বিভিন্ন দেশে তৈরি। এগুলোর গুণ ও মানেও ভিন্নতা আছে। তাই বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এমআরপিতে পার্থক্য আছে। তবে ইতিমধ্যে নির্ধারিত মূল্যের তালিকায় দেখা যায়, ১ হাজার ১২৫ টাকায় লেন্স পাওয়া যাবে। কেউ চাইলে ১৪ হাজার ৬০০ টাকা দিয়েও অন্য লেন্স কিনতে পারবেন।
অধিদপ্তরের পরিচালক নায়ার সুলতানা বলেন, ‘দেশে মোট কতটি ব্র্যান্ডের লেন্স আছে তা চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। এ কাজে ব্যবসায়ী ও চক্ষুরোগ চিকিৎসার বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোর সহায়তা নেওয়া হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানে হৃদ্রোগীদের শরীরে স্টেন্ট পরানো হয়, সেগুলো পরিদর্শন করছেন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে স্টেন্টের মূল্যতালিকা টাঙিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া স্টেন্টের মূল্যসংবলিত পোস্টার ছাপানোর উদ্যোগ নিয়েছে অধিদপ্তর। এসব পোস্টার সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে সাঁটা হবে।
অধিদপ্তর ইতিমধ্যে হৃদ্রোগের চিকিৎসায় ৪০টি ব্র্যান্ডের স্টেন্টের এমআরপি ঠিক করেছে। তালিকায় দেখা যায়, ১৪ হাজার ৩৮৮ টাকায় এখন স্টেন্ট পাওয়া যাবে। আবার ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮৯১ টাকাও এমআরপি নির্ধারণ করা হয়েছে।
অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেছেন, লেন্সের এমআরপি ঠিক করার পর অধিদপ্তর হৃদ্রোগ চিকিৎসার অন্যান্য সামগ্রীর এমআরপি ঠিক করার কাজে হাত দেবে। এর মধ্যে আছে হৃদ্যন্ত্রের ভালভ, পেসমেকার, ক্যাথেটার ইত্যাদি। এরপর তারা কৃত্রিম হাড় বা অন্যান্য সামগ্রীর এমআরপি ঠিক করবে।