কওমির সনদের স্বীকৃতির জন্য প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে

কওমি মাদ্রাসার শিক্ষাসনদের স্বীকৃতির জন্য ২০ লাখ কওমি ছাত্রের ৪০ লাখ চোখ বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে তাকিয়ে আছে। গতকাল বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে কওমি শিক্ষাসনদ স্বীকৃতি বাস্তবায়ন পরিষদ নামের একটি সংগঠন এ দাবি করে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেছে, তিনি যেন কারও চোখরাঙানির পরোয়া না করেন।
পরিষদের সদস্যসচিব ইয়াহইয়াহ মাহমুদ বলেন, কওমি শিক্ষাসনদের স্বীকৃতি আদায়ে মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকেরা ফুঁসে উঠছেন। সময়ের সাহসী সন্তান ফরিদ উদ্দিন মাসউদসহ কওমি অঙ্গনের অভিভাবকেরা এ অধিকার আদায়ে ত্যাগ ও কোরবানি দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু বেফাকের (কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড) ছদ্মবেশে কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তি একটি বিশেষ গোষ্ঠীর অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে এর বিরুদ্ধে নেমেছেন। তিনি হুঁশিয়ারি জানিয়ে বলেন, প্রয়োজনে ওই সব রাজনৈতিক ব্যক্তিকে বাদ দিয়ে বেফাক পুনর্গঠন করা হবে। শীর্ষস্থানীয় আলেমদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করা হবে।
ওই সব ব্যক্তি ও গোষ্ঠী সম্পর্কে জানতে চাইলে ইয়াহইয়াহ মাহমুদ বলেন, তাঁরা ২০-দলীয় জোটসংশ্লিষ্ট কিছু আলেম। তাঁরা স্বীকৃতি নিয়ে কালক্ষেপণ করতে চাচ্ছেন। তাঁরা আসলে জামায়াতের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চান।
কওমি শিক্ষার স্বীকৃতি নিয়ে ২০০৬ সালেও আলেমরা বিভক্ত হয়ে পড়েন, এর কারণ কী—এমন প্রশ্নের জবাবে ইয়াহইয়াহ মাহমুদ বলেন, ‘কওমির স্বীকৃতি নিয়ে কারও দ্বিমত নেই। ২০০৬ সালে ওলামা-মাশায়েখদের এক সমাবেশে খালেদা জিয়া কওমি শিক্ষাসনদের স্বীকৃতির ঘোষণা দেন। ওই সমাবেশে আমিও ছিলাম। আসলে এই সরকারের (আওয়ামী লীগ) কাছ থেকে স্বীকৃতি নেবে কি না, এটা নিয়েই দ্বন্দ্ব।’
আপনারা কিছু আলেমকে ২০ দলসংশ্লিষ্ট বলছেন। কিন্তু আপনাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততার। এর মধ্যে সরকার গঠিত ‘কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা আইন কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৩’ খসড়া পর্যালোচনা কমিটির আহ্বায়ক ফরিদ উদ্দিন মাসউদের নাম বলছেন অনেকে। জবাবে ইয়াহইয়াহ মাহমুদ দাবি করেন, ফরিদ উদ্দিন মাসউদ কোনো দলের সঙ্গে নেই। তাঁর সঙ্গের কেউ সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন।
লিখিত বক্তব্যে ইয়াহইয়াহ মাহমুদ বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদসহ মন্ত্রিপরিষদের অন্য সদস্যদের কওমি মাদ্রাসা সম্পর্কে দরদি বক্তব্য শুনে আমরা আপ্লুত।’
ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের আদলে স্বীকৃতি চাওয়ায় সংবাদ সম্মেলনে বেফাকের সভাপতি শাহ আহমদ শফীকে ধন্যবাদ জানানো হয়। একই সঙ্গে স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে আগামী ১৩ অক্টোবর সকাল ১১টায় ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন, ১৪ অক্টোবর থেকে সপ্তাহব্যাপী বিভিন্ন অঞ্চলে মানববন্ধন, গণসংযোগ ও গোলটেবিল বৈঠকের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।