কঠোর বিধিনিষেধেও কানায় কানায় পূর্ণ ফেরি

মাদারীপুরের বাংলা বাজার ঘাট থেকে আসা ফেরিতে যাত্রীদের ভিড়। বুধবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে।
ছবি: সংগৃহীত

মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ও মাদারীপুর বাংলাবাজার নৌপথের ফেরিগুলোতে যানবাহনের চাপ বাড়ছে। আজ বুধবার সকাল থেকে বাংলাবাজার ঘাট থেকে শিমুলিয়ায় আসা বেশির ভাগ ফেরি যাত্রী ও যানবাহনে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল। বিকেল চারটার দিকে শিমুলিয়া ঘাট স্বাভাবিক থাকলেও মাঝিকান্দি ঘাটে সাড়ে চার শতাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় ছিল। পদ্মা পাড়ি দিতে গিয়ে উপেক্ষিত ছিল স্বাস্থ্যবিধি।

উভয় ঘাট–সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জীবিকার তাগিদ, পারিবারিক সমস্যাসহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে ঘাটে আসছেন যাত্রীরা। মানবিক দিক বিবেচনা করে তাঁদের আটকে না রেখে নদী পার হতে দেওয়া হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে শিমুলিয়া ঘাটে যাত্রী ও ব্যক্তিগত যানবাহন আসছে। সেগুলো ঘাটে অপেক্ষমাণ ফেরিতে উঠে মাদারীপুরের দিকে যাচ্ছে। লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা ফেরিতে উঠছেন। মাদারীপুর ঘাট থেকে আসা প্রতিটি ফেরিতে যানবাহনের মধ্যে আছে ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্স, মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার। তবে শিমুলিয়া ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় কোনো যানবাহন ছিল না। বাংলাবাজার ঘাটে দেড় শ ছোট গাড়ি ও তিন শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক পারাপারের অপেক্ষায় আছে।

ঘাট–সংশ্লিষ্ট লোকজন ও স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, করোনা মহামারির কারণে চলাচলে বিধিনিষেধ থাকায় শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে লঞ্চ, স্পিডবোট ও ট্রলার চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ কারণে যাত্রীদের ফেরিতে পারাপার করা হচ্ছে। ঈদের পরদিন থেকে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেন মানুষ। তবে যাঁরা ঈদে বাড়ি যেতে পারেননি, তাঁরা এখনো ঢাকা ছাড়ছেন। ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলে যোগ দিতে ঢাকার দিকে রওনা করছেন যাত্রীরা। ফলে ঘাটের দুই দিকেই যাওয়া-আসার চাপ আছে। তবে রাজধানীর দিকেই চাপ অনেক বেশি ছিল। ফেরিতে মানুষ, গাড়ি, মোটরসাইকেল সমানতালে আসছে।

শিমুলিয়া ঘাটের ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক (টিআই) মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘আমাদের এই পারে কোনো চাপ নেই। যানবাহন আসামাত্র ফেরিতে উঠে যেতে পারছে। তবে ৩০ থেকে ৪০টি ট্রাক পারাপারের অপেক্ষায় আছে। বাংলাবাজার ঘাট থেকে যেসব ফেরি আসছিল, সেগুলো যানবাহন, যাত্রী এবং মোটরসাইকেলে পূর্ণ ছিল। এপারে আমরা নিয়ন্ত্রণ করছি। ওই পার থেকে এলে আমাদের তেমন কিছু করার থাকছে না।’

বাংলাবাজার ঘাটের টিআই মো. জামাল হোসেন বুধবার বিকেল চারটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুপুরের পর থেকে প্রায় দুই ঘণ্টা আমাদের পারে কোনো ফেরি ছিল না। এর ফলে ঘাটে এসে যানবাহন জড়ো হতে থাকে।’ বিকেল থেকে ঘাটে তিন শতাধিক পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক ও দেড় শর বেশি ছোট গাড়ি পারাপারের অপেক্ষায় আছে।

বিধিনিষেধের মধ্যে এত চাপের কারণ যানতে চাইলে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘গার্মেন্টস খোলা। এ ছাড়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠান খোলা। সেই সঙ্গে বিদেশ গমন, পারিবারিক বিভিন্ন ঝামেলা দেখিয়ে মানুষ ঘাটের দিকে আসছে। মহাসড়কের ঝামেলা এড়িয়ে যারা ঘাটে আসতে পারছে, মানবিক দিক বিবেচনায় এনে আমরা তাদের নদী পার হওয়ার জন্য ছেড়ে দিচ্ছি।’

শিমুলিয়া ঘাটের বিআইডব্লিউটিসির ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) ফয়সাল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক দিন ধরে ঢাকামুখী চাপ চলছে। বাংলাবাজার থেকে আসা ফেরিগুলো যাত্রী ও যানবাহন বোঝাই করে আসছে। স্রোতের কারণে ফেরি চলাচল করতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। বিকেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। নদীতে সাতটি ফেরি চলাচল করছে।