করোনায় দেড় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ মৃত্যু

গত কিছু দিন ধরে দেশে করোনায় মৃত্যু বাড়ছে
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে মৃত্যু আবার বেড়েছে।  শুক্রবার সকাল আটটা থেকে আজ শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস সংক্রমিত ৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৫৭ জনের। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ছিল ১৮ দশমিক ৯২ শতাংশ।

আজ বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল ৩ হাজার ৮৮৩ জনের। ওই সময় করোনায় মৃত্যু হয়েছিল ৫৪ জনের। শনাক্তের হার ছিল ১৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
করোনায় গত দেড় মাসের মধ্যে এটাই সর্বোচ্চ মৃত্যু। গত ২ মে ৬৯ জনের মৃত্যু হয়।
দেশে এ পর্যন্ত করোনা সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মোট ৮ লাখ ৪৮ হাজার ২৭। মোট মৃত্যু হয়েছে ১৩ হাজার ৪৬৬ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৮০ হাজার ১৪৬জন।

শেষ ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে খুলনা বিভাগে। ১৪ জন মারা গেছেন ঢাকা বিভাগে। চট্টগ্রামে ১১ জন, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে মারা গেছেন ৮ জন করে। এ ছাড়া সিলেট ও ময়মনসিংহে একজন করে মারা গেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ১৬ হাজার ৯৬৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা বোঝার একটি নির্দেশক হলো রোগী শনাক্তের হার। কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়। পরে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। তারপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। গত বছরের শেষ দিকে এসে সংক্রমণ কমতে থাকে।

এ বছরের মার্চ থেকে করোনা সংক্রমণ আবার বেড়ে যায়। মার্চের প্রথমার্ধেই দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা হাজারের ওপরে চলে যায়। বাড়তে থাকে মৃত্যুর সংখ্যাও। গত ২৬ মার্চের বুলেটিনে আগের ২৪ ঘণ্টায় ৩৪ জনের মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়, সেখানে ১৯ এপ্রিলের বুলেটিনে আগের ২৪ ঘণ্টায় ১১২ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়। দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ওই দিনই সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়।
করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় ৫ এপ্রিল থেকে মানুষের চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, যা এখনো বহাল। এ বিধিনিষেধে মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে।

তবে গত মাসের মাঝামাঝিতে পবিত্র ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে ‘লকডাউন’ ঢিলেঢালা হয়ে পড়ে। ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটা ও যাতায়াতে বিপুল লোকসমাগম দেখে জনস্বাস্থ্যবিদেরা এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আশঙ্কা করেছিল, ঈদের পর সংক্রমণ আবার বেড়ে যাবে। এদিকে ভারত সীমান্তবর্তী ১৫টি জেলায় রোগী দ্রুত বাড়ছে। কিছুদিন ধরে সারা দেশেও করোনা সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করেছে।