কষ্ট বাড়ছে গরিব ও মধ্যবিত্তের

বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব কম। এপ্রিলে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি কমেছে। সন্দেহ আছে মূল্যস্ফীতির হিসাব নিয়েও।

  • চালসহ বিভিন্ন পণ্যের বাড়তি দাম টিসিবির হিসাবে আসেনি।

  • ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, নেপাল উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ে ভুগছে।

  • মূল্যস্ফীতি এখন বিশ্বজুড়েই নতুন চ্যালেঞ্জ।

হোটেলে সবজি কাটার কাজ করেন বেদানা বেগম। দৈনিক মজুরি পান ১০০ টাকা। কম দামে সবজি কেনা যায়, এমন খবর শুনে কারওয়ান বাজারে আসেন তিনি। কিন্তু ফুটপাতের বাজারেও সবজির দাম বাড়তি হওয়ায় কিছু কিনতে না পেরে হতাশ এই প্রবীণ নারী। গতকাল দুপুরে
ছবি: সাজিদ হোসেন

চাল, ডাল, আটা, ময়দা, তেল, লবণসহ প্রায় সব নিত্যপণ্যের বাড়তি দামের কারণে গরিব ও সীমিত আয়ের মানুষের কষ্ট বেড়েছে। তাঁদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। রোজগার বৃদ্ধি না পাওয়ায় বাজারের তালিকা থেকে সদাই কাটছাঁট করতে হচ্ছে। মাসের বাজার খরচ আঁটসাঁট করছেন অনেকে। ফলে গরিব ও মধ্যবিত্ত মানুষ এখন সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন।

কয়েক মাস ধরে চাল, ডাল, গম, তেল, ময়দা, লবণসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের পাশাপাশি খাদ্য–বহির্ভূত পণ্যের দামও বেড়েছে। যেমন পোশাক, খাতা-কলম, বাসাভাড়া, যাতায়াত ভাড়া। বিশেষ করে গত নভেম্বর মাসে ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির পরপরই জীবনযাত্রার খরচ বাড়তে শুরু করে। আবার গত বছরের মাঝামাঝি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারেও ভোগ্যপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল, মধ্যবর্তী পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়তে থাকে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হওয়া ইউক্রেন যুদ্ধ আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজারকে আরেক দফা উসকে দেয়।

জিনিসপত্রের দাম বাড়লে সরকারি হিসাবে তা মূল্যস্ফীতি দিয়ে প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতির হিসাব করে। দেশে গত তিন মাস ধরে টানা মূল্যস্ফীতি হয়েছে, যা ৬ শতাংশের ওপরে আছে। সর্বশেষ গত এপ্রিল মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ২৯ শতাংশ। এই এপ্রিল মাসেই নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে সবচেয়ে বেশি ভুগেছে মানুষ। কিন্তু সরকারি হিসাব বলছে, এপ্রিল মাসে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি কমেছে।

মূল্যস্ফীতিতে বৈচিত্র্য এসেছে। আগের চেয়ে বেশিসংখ্যক পণ্যের দাম বাড়ছে। তাই জীবনযাত্রায় মূল্যস্ফীতির প্রভাব বেশি টের পাওয়া যাচ্ছে।
জাহিদ হোসেন, সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ, বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়

করোনা–পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়েই ছোট-বড় সব দেশেই মূল্যস্ফীতি হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখাই এখন নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি পার্শ্ববর্তী ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার তুলনায় কম। অথচ এসব দেশকেও আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ভোগ্যপণ্যসহ বিভিন্ন পণ্য কিনতে হয়। তাই বাংলাদেশের ৬ শতাংশের মতো মূল্যস্ফীতির তথ্য নিয়ে ইতিমধ্যে অর্থনীতিবিদেরা প্রশ্ন তুলেছেন।

ডাল-ভাত খেয়েই দিন পার করতাম। এখন তা–ও জোগাড় করা কঠিন হয়ে গেছে। আগে বাজারে গিয়ে কী কিনতে পারব আর কী পারব না, তার ধারণা থাকত। এখন বাজারে গিয়ে দেখি, আজ এটার দাম বেড়েছে, তো কাল অন্যটার
বিলকিছ বেগম

জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিবিএস মূল্যস্ফীতির হিসাব জাতীয় পর্যায়ের গড় হিসাব। মূল্যস্ফীতির প্রভাব সবার জন্য ৬ শতাংশ নয়। গরিব মানুষের ওপর এর প্রভাব অনেক বেশি। সাধারণ মানুষের কষ্ট আছে।’ তিনি একটি উদাহরণ দিয়ে বলেন, শহরের মূল্যস্ফীতি হিসাব করতে ৪২২টি পণ্য বিবেচনা করে বিবিএস। গত মার্চ এসব পণ্যের মধ্যে ২২৪টি পণ্যের দাম ৬ শতাংশের বেশি বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে খিলিপানের। এ পণ্যটিতে মূল্যস্ফীতি ১৭৮ শতাংশ। আরও ১৭৩টি পণ্যের মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের কম বেড়েছে। এর মানে হলো, মূল্যস্ফীতিতে বৈচিত্র্য এসেছে। আগের চেয়ে বেশিসংখ্যক পণ্যের দাম বাড়ছে। তাই জীবনযাত্রায় মূল্যস্ফীতির প্রভাব বেশি টের পাওয়া যাচ্ছে।

বাজার পরিস্থিতি

রাজধানীর বেগুনবাড়ি এলাকার বিলকিছ বেগমের চারজনের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি নিজেই। ফেরি করে পান বিক্রি করে চলে তাঁর সংসার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডাল-ভাত খেয়েই দিন পার করতাম। এখন তা–ও জোগাড় করা কঠিন হয়ে গেছে। আগে বাজারে গিয়ে কী কিনতে পারব আর কী পারব না, তার ধারণা থাকত। এখন বাজারে গিয়ে দেখি, আজ এটার দাম বেড়েছে, তো কাল অন্যটার।’

কয়েক মাস ধরেই নিত্যপণ্যের দাম ক্রমাগত বাড়ছে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে গত এক মাসে (১৯ এপ্রিল থেকে ১৯ মে) নিত্যপণ্যের এই মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় আছে আটা, ময়দা, ভোজ্যতেল, ডাল, ডিম, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, শুকনা মরিচ, চিনি ও লবণ। তবে বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, টিসিবির মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় থাকা পণ্যের বাইরে চাল, গম, ডিটারজেন্ট, টুথপেস্ট, গুঁড়া দুধ, তরল দুধ, বেকারি পণ্য, নুডলস-পাস্তা ইত্যাদির দাম বেড়েছে।

মানভেদে ডালের দাম খুচরা বাজারে কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। ডিমের দাম হালিতে বেড়েছে ৫ থেকে ৭ টাকা। অন্যদিকে গত এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। আদা, লবণ ও চিনির দামও কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে।

টিসিবির নিত্যপণ্যের তালিকা অনুযায়ী, গত এক মাসে বিভিন্ন পণ্যে ১ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যবৃদ্ধির তথ্য পাওয়া গেছে। ১০০ শতাংশ দাম বেড়েছে দেশি নতুন-পুরোনো রসুনের। পেঁয়াজের দামেও বড় ধরনের উল্লম্ফন হয়েছে। টিসিবির হিসাবেই গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে অন্যান্য পণ্যের দামও বেড়েছে। যেমন আমদানি করা পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা হয়। দাম বেড়েছে ৬৪ শতাংশ। আটা ও ময়দার দাম কেজিতে বেড়েছে যথাক্রমে ৩০ ও ১৯ শতাংশ পর্যন্ত।

মানভেদে ডালের দাম খুচরা বাজারে কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। ডিমের দাম হালিতে বেড়েছে ৫ থেকে ৭ টাকা। অন্যদিকে গত এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। আদা, লবণ ও চিনির দামও কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে।

টিসিবির হিসাবের বাইরে চালের দামও বেড়েছে। এই ভরা মৌসুমেও গত সপ্তাহ থেকে ঢাকার বিভিন্ন বাজারে মোটা চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ২-৩ টাকা। এই চাল গরিব ও নিম্ন আয়ের মানুষই কেনেন। আর সরু চালের দাম কেজিতে ১ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে। কারওয়ান বাজারের ইসমাইল রাইস অ্যান্ড সন্সের স্বত্বাধিকারী জসিম উদ্দিন বলেন, ‘৫০ কেজির এক বস্তা মিনিকেট দুদিন আগে ছিল ২ হাজার ৯৫০ টাকা, আজ তার দাম ৩ হাজার ১০০ টাকা। খুচরা কিনলে আরেকটু বেশি দাম দিতে হবে।

খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি কমেছে!

সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করে। বিবিএসের সর্বশেষ হিসাবে গত এপ্রিল মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল গত দেড় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে ৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছিল।

গত এপ্রিলে চাল, আটা-ময়দা, ভোজ্যতেল, মাছ-মাংস, ডিমসহ প্রায় সব ধরনের নিত্য ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়লেও বিবিএস বলছে, ওই মাসে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ৬ দশমিক ২৪ শতাংশ হয়েছে। মার্চ মাসে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ। তবে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতি এখন খাদ্যপণ্যের চেয়ে বেশি। এপ্রিল মাসে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ হয়েছে।

তবে টানা ৩ মাস ধরে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের ওপরে আছে। গত পাঁচ-ছয় বছরে এমন দেখা যায়নি। গত জানুয়ারি মাসে ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়। এরপর গত তিন মাস ধরে মূল্যস্ফীতি টানা বেড়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ৬ দশমিক ১৭ শতাংশ ও মার্চ মাসে ৬ দশমিক ২৪ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়।

পাশের দেশের উচ্চ মূল্যস্ফীতি

বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি গত তিন মাস ধরে ৬ শতাংশের মতো থাকলেও আশপাশের সব দেশের মূল্যস্ফীতি বেশ বেড়েছে। গত এপ্রিল মাসের হিসাবে ভারতের সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। ভারতে পাইকারি পর্যায়, জ্বালানি, উৎপাদনসহ বিভিন্ন উপখাতেরও মূল্যস্ফীতির হিসাব করে। গত এপ্রিল মাসে দেশটির খাদ্যপণ্যে ৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ, পাইকারি ব্যবসায় ১৫ দশমিক ০৮ শতাংশ, জ্বালানিতে ৩৮ দশমিক ৬০ শতাংশ এবং উৎপাদন খাতে ১০ দশমিক ৮৫ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে গত এক বছরের ব্যবধানে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এক বছর আগে এক ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বিক্রি হয়েছে ৬০ ডলারে। চলতি সপ্তাহে তা ১০৫ থেকে ১১০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। এক বছর আগে ১২০০-১৩৩০ ডলারে এক টন সয়াবিন তেল আমদানি করা যেত। এখন তা বেড়ে ১৮৬০ ডলারে উন্নীত হয়েছে।

অর্থনৈতিকভাবে চরম সংকটের পড়ে যাওয়া শ্রীলঙ্কার মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশি নাজুক। সর্বশেষ গত এপ্রিল মাসে দেশটিতে ২৯ দশমিক ৮ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে। পাকিস্তান ও নেপালেও মূল্যস্ফীতি বেশ কিছুটা বেশি। গত এপ্রিল মাসে পাকিস্তানে ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ এবং নেপালে ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে।

আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতি

করোনার ধাক্কা সামলে বিশ্বের ছোট-বড় সব দেশেই কমবেশি অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার শুরু হয়। পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরপরই আন্তর্জাতিক বাজারে নিত্যপণ্য ও শিল্পের কাঁচামালের দাম বাড়তে থাকে। এর সঙ্গে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ আন্তর্জাতিক পণ্যবাজারকে আরও উসকে দেয়। বাংলাদেশকেও আন্তর্জাতিক বাজার থেকে বাড়তি দামে পণ্য ও কাঁচামাল কিনতে হচ্ছে। এতে আমদানি খরচ বেড়েছে। গত কয়েক দিনে টাকার বিপরীতে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির ফলে আমদানিকারকের খরচ আরও বেড়েছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে গত এক বছরের ব্যবধানে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এক বছর আগে এক ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বিক্রি হয়েছে ৬০ ডলারে। চলতি সপ্তাহে তা ১০৫ থেকে ১১০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। এক বছর আগে ১২০০-১৩৩০ ডলারে এক টন সয়াবিন তেল আমদানি করা যেত। এখন তা বেড়ে ১৮৬০ ডলারে উন্নীত হয়েছে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম খাদ্যশস্য গমের চাহিদা বছরে ৭৫ লাখ টন। চাহিদার প্রায় ৮৫ শতাংশ গম আমদানি করতে হয়। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে গমের আন্তর্জাতিক বাজার টালমাটাল। এর মধ্যে ভারত গম রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় দাম আরও বাড়ছে। এখন টনপ্রতি গমের দাম ৪৩০ ডলারের বেশি। এক বছরের ব্যবধানে গমের দাম দ্বিগুণ হয়েছে।

শিল্পকারখানা ও নির্মাণ খাতে ব্যবহৃত লোহা বা এমএস রডের কাঁচামাল হিসেবে পুরোনো লোহার টুকরা ও পুরোনো জাহাজের আমদানি মূল্য বেড়েছে। ২০২১ সালের মে মাসে প্রতি টন পুরোনো লোহার টুকরার দাম ছিল ৪৮০ ডলার। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৮০ ডলারে। অন্যদিকে পুরোনো জাহাজ আমদানি করতে এক বছর আগের চেয়ে দাম টনপ্রতি দ্বিগুণ হয়ে ৬০০ ডলার হয়েছে। সিমেন্টশিল্পের প্রধান কাঁচামাল ক্লিংকারের দাম এক বছর আগে ছিল প্রতি টন ৫২ ডলার, এখন তা ৮০ ডলারের কমে মিলছে না। বস্ত্র খাতে ব্যবহৃত তুলার প্রায় শতভাগই আমদানি করতে হয়। এক বছরের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে তুলায় দাম পৌনে ১ ডলার বেড়ে ২ দশমিক ৬৫ ডলার হয়েছে।

এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, বৈশ্বিকভাবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা এখন বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে এসেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টিতে তেমন কিছু করার নেই। রিজার্ভ থাকতে থাকতে ডলারের মুদ্রা বিনিময়ের হার সমন্বয় করা যেতে পারে। এতে মূল্যস্ফীতির চাপ আসবে। মূল্যস্ফীতির চাপ প্রশমন করতে সময়োপযোগী মুদ্রানীতির পাশাপাশি বাজেটের মাধ্যমে পদক্ষেপ নিতে হবে।