কাচের পাখি

মনের আনন্দে কাচের পাখি বানান সুরুজ মিয়া। যেদিন মন ভালো থাকে, সেদিন হরেক রকমের পাখি তৈরি করেন। মাঝেমধ্যে কাচের রঙিন ফুল, রকেটও বানান। নিজের বয়স জানা নেই সুরুজ মিয়ার। মনে করতে পারেন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় নৌকায় করে চিকিৎসকদের মেঘনা নদী পার করে দেওয়ার স্মৃতি।
গত বুধবার সকালে মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যানে তাঁর বাড়িতে কথা হয় সুরুজ মিয়ার সঙ্গে। বাঁশের বেড়ার ফাঁক দিয়ে রোদের আলো আসছে। কুপিতে আগুন জ্বালানো, তাতে পা দিয়ে হাওয়া পাম্প করার ব্যবস্থা আছে। কুপিতে অল্প অল্প করে আঁচ দিয়ে কাচ গলিয়ে পাখি, ফুল বানানোর কাজ করছেন সুরুজ মিয়া।
সুরুজ মিয়া বলেন, তাঁর বাড়ি কুমিল্লায়। অনেক বছর আগে বাবা মারা যাওয়ায় অন্যরা জমি দখল করে নেয়। বউকে নিয়ে ঢাকায় আসেন। এক সময় প্রাইভেট কার চালাতেন। এরপর জিঞ্জিরার ওষুধ কারখানাতেও কাজ নেন। সেখান থেকেই কাচের পাখি বানানো শেখেন।
একটা কাচের পাখি বানাতে সময় লাগে ২০ মিনিট। নিজের মুখে রং নিয়ে তা কাচের পাখি, ফুলের ভেতর ঢুকিয়ে দেন। সুরুজ মিয়ার স্ত্রী পারভীন তাঁকে সাহায্য করেন। কাচ বাদে পাখি ও ফুল বানানোর অন্য কাঁচামাল নিয়ে আসেন চকবাজার থেকে। কাচ আনেন টঙ্গী স্টেশন এলাকা থেকে। একসঙ্গে তিনটি কাচ আনতে পারেন তিনি। সেগুলো দিয়ে সপ্তাহ খানেক চলে পাখি বানানো।
বানানো শেষে বিক্রির পালা। সুরুজ মিয়া বলেন, পাখি, ফুল, কাচের রঙিন রকেট সুরুজ মিয়া বিক্রি করেন সংসদ ভবনের সামনে। হেঁটে হেঁটে বিভিন্ন স্কুলের সামনেও বিক্রি করেন। প্রতিটি পাখি ১৫ থেকে ২০ টাকা করে বিক্রি করেন।