কাবুল থেকে মার্কিন বিমানে কাতারে দুই বাংলাদেশি

আফগানিস্তানের কাবুল বিমানবন্দরে দেশ ছাড়তে মরিয়া মানুষের ঢল।
ফাইল ছবি: এএফপি

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে কাজ করতেন বাংলাদেশি ফারুক হোসেন ও মহিউদ্দিন। মার্কিন বিমানবাহিনীর পরিবহন বিমানে তাঁদের কাবুল থেকে কাতারে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের তিনজন কর্মকর্তাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে কাজাখস্তানে। এর বাইরে আফগানিস্তানে আরও ২৪ বাংলাদেশির আটকা পড়ার কথা জানা গেছে।

উজবেকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জাহাঙ্গীর আলম রোববার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, এই দুই বাংলাদেশিকে কাতারের রাজধানী দোহার আল উদেইদ বিমানঘাঁটিতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ফারুক হোসেনের বাড়ি বরিশালে। মহিউদ্দিনের বাড়ি কুমিল্লায়। এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে ২৭ বাংলাদেশি আফগানিস্তানে আটকে পড়ার তথ্য ছিল। তাতে এই দুজনের বিষয়ে কোনো তথ্য ছিল না।

উজবেকিস্তান এবং সমদূরবর্তী দায়িত্ব হিসেবে আফগানিস্তানের রাষ্ট্রদূত মো. জাহাঙ্গীর আলম এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে কর্মরত দুই বাংলাদেশির বিষয়ে আগে তথ্য ছিল না। রোববার তাদের কাবুল থেকে দোহায় নেওয়ার পর আফগানিস্তানের সূত্র থেকে তাদের সম্পর্কে জেনেছি।’ তিনি জানান, রোববার কাবুল থেকে জাতিসংঘের একটি ফ্লাইটে ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের তিন কর্মকর্তাকে কাজাখস্তানের রাজধানী নূর সুলতানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ব্র্যাকের তিন কর্মকর্তার আগামী মঙ্গলবার নূর সুলতান থেকে ঢাকা রওনার কথা রয়েছে। কাবুলে অবস্থানরত ব্র্যাকের অন্য তিন কর্মকর্তার আগামী কয়েক দিনের মধ্যে কাবুল ছাড়ার প্রস্তুতি চলছে।

জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম জানান, ফিচনার ওয়াটার অ্যান্ড ট্রান্সপোর্টেশন নামের একটি জার্মান প্রকৌশল সংস্থায় কর্মরত দুই বাংলাদেশি উজবেকিস্তান হয়ে দেশে ফিরতে চান। মো. রেজাউল করিম এবং এ এম এম মিজানুর রহমান নামের ওই দুই বাংলাদেশি উজবেকিস্তানের ভিসা পেয়েছেন। এখন কাবুল থেকে জার্মানির একটি ফ্লাইটে তাসখন্দ হয়ে তাঁরা ঢাকা ফিরবেন।

এ ছাড়া কাবুলে অবস্থানরত দেশটির শীর্ষস্থানীয় মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান আফগান ওয়্যারলেসে কর্মরত সাত প্রকৌশলী, কারাগার থেকে বেরিয়ে যাওয়া এক বাংলাদেশি, পাকিস্তান সীমান্তবর্তী জালালাবাদ শহরে থাকা তাবলিগ জামাতের ছয়জন কর্মী এবং মাজার-ই-শরিফে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এক বাংলাদেশিকে ফেরানোর চেষ্টা অব্যাহত আছে।

ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এই প্রতিবেদককে জানান, জার্মান প্রতিষ্ঠানে কর্মরত দুই বাংলাদেশির জন্য উজবেকিস্তানের ভিসা পাওয়ার ফলে কাবুল থেকে অন্য বাংলাদেশিরা উজবেকিস্তান হয়ে দেশে ফিরতে চাইলে কোনো ভিসা জটিলতায় পড়বে না বলে নিশ্চয়তা পাওয়া গেছে।

আফগানিস্তানে তালেবান বাহিনী নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর দেশটিতে অবস্থানরত বিদেশিদের সঙ্গে অনেক আফগানও দেশ ছাড়তে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। গত রোববার থেকে কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি বিরাজ করছে।