কার্টুনিস্ট কিশোরের কানের আঘাত গুরুতর

কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর

কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরের ডান কানের আঘাত গুরুতর। তাঁর কানের পর্দায় গর্তের মতো হয়ে গেছে। এই কান দিয়ে শুনতে হলে ভেতরে বিশেষ ধরনের হিয়ারিং এইড বসাতে হবে। এর ছয় মাস পর চিকিৎসকেরা পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।

পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর গতকাল রোববার কিশোরের চিকিৎসকেরা এই পরামর্শ দিয়েছেন বলে তাঁর বড় ভাই আহসান কবির জানিয়েছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে কিশোরের অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিসের ফলে তাঁর চোখেরও সমস্যা দেখা দিয়েছে। চোখে অস্ত্রোপচার করতে হবে। তাঁর ডায়বেটিস এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। রক্তচাপ স্বাভাবিক নয়।

আহসান কবির বলেন, আহমেদ কবির কিশোর নৌবাহিনীতে ক্যাডেট হিসেবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। বেড়েই উঠেছিলেন শক্ত মনোবল নিয়ে। তাই নির্যাতনের কারণে অসুস্থ হলেও মানসিকভাবে আগের মতোই শক্ত আছেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার জামিনে মুক্তির পর কার্টুনিস্ট কিশোর প্রথম আলোকে বলেছিলেন, গ্রেপ্তার দেখানোর ৬৯ ঘণ্টা আগে তাঁকে কাকরাইলের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় একটি দল। গাড়িতে ওঠানোর পরপরই টুপি পরিয়ে কিশোরের চোখ ঢেকে দেয় এবং হাতে হাতকড়া পরায়। অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়।

কার্টুনিস্ট কিশোর, লেখক ও উদ্যোক্তা মুশতাক আহমেদ, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গত ৫ মে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে র‌্যাব-৩। দিদারুল ও মিনহাজ এর আগে জামিনে মুক্তি পান। মুশতাক গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে কারাগারে মারা যান। এরপর কিশোর উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান। বৃহস্পতিবার তিনি কাশিমপুর কারাগার থেকে বের হন। পরে তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

র‌্যাবের মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে যোগসাজশে ‘আই এম বাংলাদেশি’ নামে একটি ফেসবুক পেজ খুলে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুণ্ন করার অভিযোগ আনা হয়।

এজাহারে বলা হয়, আসামিদের উদ্দেশ্য ছিল অপপ্রচার বা মিথ্যা জানা সত্ত্বেও গুজবসহ বিভিন্ন ধরনের পোস্ট দেওয়া এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানো।

গত ১১ জানুয়ারি রমনা থানার পুলিশ আদালতে মুশতাক, কিশোর ও দিদারুলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় এবং বাকিদের অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করে। পরে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত মামলাটির অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেয়। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম এখন তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে।