কুমিল্লা শহরে ২২৭টি পুরাতন ও পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবন
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ২২৭টি পুরাতন ও পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে। ওই ভবনগুলো ভেঙে ফেলার চিঠি দেওয়া হলেও হাতে গোনা কয়েকটি ভবন নামমাত্র সংস্কার করা হয়েছে। ভাঙা হয়েছে মাত্র একটি ভবন। অন্য ভবনের মালিকেরা কেউ সময় চেয়েছেন, কেউ কেউ নিজেদের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ নয় বলে করপোরেশনকে জানিয়েছেন। এ অবস্থায় এলাকার লোকজন ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ধসে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো নগরের বাদুরতলা এলাকার একটি একতলা পুরাতন ভবন, ঝাউতলা এলাকায় কুমিল্লার দুই অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের বাসভবন রাজলক্ষ্মী ও কামিনী কুটির, রামঘাট এলাকার জেলা বিএমএ ভবন, অশোকতলা এলাকার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়, ধর্মপুর এলাকার কুমিল্লা জেলা সমবায় ইউনিয়ন কার্যালয়, ধর্মপুর এলাকার মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জাতীয় মহিলা সংস্থার কার্যালয়, বাগিচাগাঁয়ের গণপূর্ত বিভাগের কোয়ার্টার, উজিরদিঘির পাড়ের সাবেক দুর্নীতি দমন কমিশন কার্যালয়, ঈশ্বর পাঠশালা, কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড কোয়ার্টার, টমছমব্রিজ নিউ হোস্টেলের পুরাতন ভবন, মনোহরপুর এলাকার জমি বন্ধকী ব্যাংক, নিউ মার্কেট এলাকার বই মার্কেট, বাদুরতলা এলাকার পৌর কর্মচারী কল্যাণ সমিতি ভবন, ওয়াপদা বিল্ডিং, বজ্রপুরের সালেহা মঞ্জিল, বাদশা মিয়া বাজারের ট্রাস্ট সুপার মার্কেট ও বাগিচাগাঁও দমকল পুকুরপাড়ের আনন্দ কানন। এর মধ্যে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড ও ঈশ্বর পাঠশালা কর্তৃপক্ষ সময় চেয়ে মেয়রকে চিঠি দেয়। কুমিল্লা জেলা সমবায় ইউনিয়নের সভাপতি কাজী নাজমুস সাদত তাঁদের ভবনের সংস্কারের দাবি জানিয়ে চিঠি দেন। আর নিউ মার্কেট এলাকার বই মার্কেট ভাঙার কাজ চলছে। ১০ জুন বজ্রপুরের সালেহা মঞ্জিলের এ কে এম মিজানুর রহমান ভবন অপসারণের চিঠির জবাব দিয়েছেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, তাঁদের পাঁচতলা ভবন ঝুঁকিপূর্ণ নয়। ভবন অপসারণের নির্দেশ প্রত্যাহার করা হোক। পরে মেয়র ঈদুল আজহা পর্যন্ত তাঁদের ওই ভবনে থাকার অনুমতি দেন। সুশাসনের জন্য নাগরিক কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন মালিক ও প্রশাসনের সঙ্গে আঁতাত না করে খুব দ্রুত এগুলো ভেঙে ফেলা প্রয়োজন। নইলে ভবন ধসে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মো. নূরুল্লাহ বলেন, ‘গত ১২ এপ্রিল প্রথম পর্যায়ে ৬৬টি ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ইতিমধ্যে একটি ভবন ভাঙা ও পাঁচটি ভবন সংস্কার করা হয়েছে। ২২ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় আরও ১৬৭টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা তৈরি করা হয়। এসব ভবন যেকোনো মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে। তাই আমরা ওই তালিকা তৈরি করে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়েছি।’ মেয়র মো. মনিরুল হক বলেন, ‘সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর আমরা তৎপর হয়ে পরিত্যক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা করি। কুমিল্লায় ২২৭টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে।’