ক্লাসের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে স্কুলগুলো

  • এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাবে।

  • অন্য শ্রেণিগুলোর শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে এক দিন ক্লাসে যেতে হবে।

  • যেদিন যে শ্রেণির শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাবে, সেদিন দুটি করে ক্লাস।

আগামী রোববার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীর শুরু হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম। সে জন্য দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। শ্রেণিকক্ষসহ আশপাশের এলাকা পরিচ্ছন্ন করার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মানতে নেওয়া হচ্ছে নানা রকম সচেতনতামূলক ব্যবস্থা। গতকাল দুপুরে রাজধানীর অগ্রণী স্কুল অ্যান্ড কলেজে
ছবি: সাজিদ হোসেন

রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায় গিয়ে দেখা গেল, একটি কক্ষে ঝাড়ু দিচ্ছিলেন একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী। বেঞ্চগুলো গোছানো। বারান্দার সামনে আঙিনা পরিষ্কার করছেন আরও একাধিক কর্মী।

করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে দেড় বছর বন্ধের পর আগামী রোববার থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলার ঘোষণায় এমন প্রস্তুতি চলছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সেই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে নিজ কার্যালয়ে কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ।

ঘুরে দেখা গেল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির নিচতলার একটি কক্ষ আইসোলেশন কক্ষ হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। তাৎক্ষণিক কারও উপসর্গ দেখা দিলে বা অসুস্থতা বোধ করলে তাকে এখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হবে। সেখানে একটি বিছানা, একটি অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ প্রাথমিক চিকিৎসার কিছু ব্যবস্থা রয়েছে। আটটির মতো তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র কেনা হয়েছে। আরও কয়েকটি কেনা প্রক্রিয়াধীন।

আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে রাজধানীর তিনটি ক্যাম্পাসে মোট শিক্ষার্থী প্রায় ২২ হাজার। অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম জানালেন, করোনা সংক্রমণ থেকে সুরক্ষার অংশ হিসেবে ৮১৫ জন শিক্ষক-কর্মচারীর প্রায় সবাই টিকাও নিয়েছেন। তবে কিছুসংখ্যক শিক্ষক-কর্মচারীর দ্বিতীয় ডোজ বাকি আছে।

ঢাকা ও এর বাইরে ১৭টি বিদ্যালয়ে সরেজমিনে ১৩টিতে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি দেখা গেছে। ৪টি প্রস্তুতিতে এখনো পিছিয়ে।

অবশ্য প্রতিষ্ঠানটির একজন শিক্ষকের কথায় মনে হলো, পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিলেও খোলার পর দীর্ঘ বিরতির কারণে শিক্ষার্থীরা সশরীর ক্লাসে এসে স্বাস্থ্যবিধি কতটা মানতে পারবে, একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানও সেগুলো কতটা বাস্তবায়ন করতে পারবে, সেটাই বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন শিক্ষকেরা।

৫ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য ১৯ দফা নির্দেশনা দিয়েছিল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিগুলো গতকালের মধ্যে সম্পন্ন করতে বলা হয়েছিল। অবশ্য গতকাল সরকারের তথ্য বিবরণীতে বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো প্রস্তুতির জন্য সময় পাবে আগামী শনিবার পর্যন্ত।

গতকাল প্রথম আলোর প্রতিনিধিরা রাজধানীসহ দেশের বিভাগীয় শহর এবং উপজেলা শহরে অবস্থিত ১৭টি বিদ্যালয় ঘুরে জানান, ১৩টি বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মচারী টিকা নিয়েছেন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র কেনাসহ অন্যান্য প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। তবে চারটি বিদ্যালয় গতকাল পর্যন্ত প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে পারেনি। এর মধ্যে তিনটি বিদ্যালয় উপজেলা পর্যায়ের। তাদের কেউ তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র কেনেনি, কেউ পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ করতে পারেনি।

এর মধ্যে মাউশি গতকাল নতুন নির্দেশনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে মানসম্পন্ন কার্যপ্রণালি বিধি (এসওপি) ঠিক করে দিয়েছে। যেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমপক্ষে ৮০ শতাংশ শিক্ষক-কর্মচারীকে টিকা দেওয়া, মাস্ক পরাসহ ৬৩টি নির্দেশনা রয়েছে। অপর এক আদেশে খোলার পর কোনো সমস্যা হয় কি না, তা প্রতিদিন চারটার মধ্যে নির্ধারিত ছকে উপজেলা বা থানা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানাতে বিদ্যালয়গুলোকে বলা হয়েছে।

বর্তমানে দেশে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ের দেড় লাখের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মোট শিক্ষার্থী প্রায় সোয়া তিন কোটি। করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছুটি চলছে। শুরুতে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাবে। আর অন্য শ্রেণিগুলোর শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে এক দিন ক্লাসে যেতে হবে। যেদিন যে শ্রেণির শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাবে, সেদিন তাদের দুটি করে ক্লাস হবে।

প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে

রাজধানীর অগ্রণী স্কুল অ্যান্ড কলেজে নানা প্রস্তুতি চোখে পড়ল। সেখানে সচেতনতামূলক ফেস্টুন টাঙানো হয়েছে। লেখা আছে ‘নো মাস্ক, নো স্কুল’।

রাজধানীর আরেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মতিঝিল শাখায় গিয়ে জানা গিয়ে জানা গেল, পঞ্চম শ্রেণি এবং এসএসসি ও এইচএসসির ক্লাসটি এমনভাবে করা হয়েছে, যাতে ভিড় না হয়। আর চতুর্থ শ্রেণির ক্লাস শনিবার, প্রথম শ্রেণিতে রোববার, দ্বিতীয় শ্রেণিতে সোমবার, তৃতীয় শ্রেণিতে মঙ্গলবার, অষ্টম শ্রেণিতে বুধবার এবং নবম শ্রেণির ক্লাস হবে বৃহস্পতিবার।

অবশ্য সব স্কুল এখনো এমন সময় সূচি ঠিক করতে পারেনি। খুলনা শহরের সরকারি ইকবালনগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ফারুকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দুই পালার ক্লাসের সময়সূচি প্রস্তুত করতে কিছুটা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

তবে বিদ্যালয়টি খোলার প্রস্তুতি মোটামুটি ভালোই। শিক্ষক-কর্মচারী ৪৩ জনের সবাই টিকা নিয়েছেন। তাপমাত্রা মাপার জন্য দুই হাজার টাকায় ইনফ্রারেড থার্মোমিটার কেনা হয়েছে। একটি কক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ আইসোলেশন কক্ষ হিসেবে প্রস্তুতের কাজ প্রক্রিয়াধীন। ১ হাজার ৩০০ মাস্কও কেনা হয়েছে।

চট্টগ্রাম সরকারি মুসলিম উচ্চবিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ২ হাজার ৪৩ জন ও শিক্ষক ৫১। সব শিক্ষক এবং ছয়জন কর্মচারী টিকা নিয়েছেন। তাপমাত্রা মাপার জন্য চারটি যন্ত্র কেনা হয়েছে। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের ৩ ফুট দূরে বসানোর জন্য বেঞ্চ সাজানোর কাজ এখনো শেষ হয়নি। পরিচ্ছন্নতার কাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার পর আজ ও আগামীকালের মধ্যে বেঞ্চগুলো সাজানো হবে। একটি কক্ষকে আইসোলেশন কক্ষ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রায় এক হাজার মাস্ক কিনেছে। হাত ধোয়ার ব্যবস্থা হলেও সচেতনতামূলক ব্যানার টানানো হয়নি।

বরিশাল নগরের গোরাচাঁদ দাস সড়কে অবস্থিত বরিশালের হালিমা খাতুন বালিকা বিদ্যালয়ের প্রবেশের পথে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানার করণীয়বিষয়ক ব্যানার লাগানো হয়েছে। তাপমাত্রা পরিমাপের যন্ত্রও কেনা হয়েছে। একটি কক্ষকে আইসোলেশন কক্ষের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। কেনা হয়েছে মাস্ক। প্রধান শিক্ষক এস এম ফখরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের ৯৫ শতাংশ দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন।

রংপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। বিদ্যালয়ের মাঠসহ চারদিকে বড় বড় ঘাস হয়েছে। যন্ত্র দিয়ে কাটা হবে এসব ঘাস। প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করতেই দুটি বেসিনে একাধিক পানির টেপ রাখার ব্যবস্থা করতে কাজ হচ্ছে। একটি কক্ষ আইসোলেশনের কাজে ব্যবহার করা হবে। একটি তাপমাত্রা মাপার যন্ত্রও কেনা হয়েছে।

প্রধান শিক্ষক ফরিদা ইয়াসমীন প্রথম আলোকে বলেন, ৫২ জন শিক্ষক ও ছয়জন কর্মচারীর সবাই দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিয়েছেন।

প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছে ময়মনসিংহের বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলে তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র কেনা হয়েছে। ৫০ শিক্ষকের মধ্যে ৪৮ জন টিকা নিয়েছেন।

বিভাগীয় শহরের বাইরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ বৌদ্ধ উচ্চবিদ্যালয়ে তাপমাত্রা মাপার জন্য পাঁচটি যন্ত্র কেনা হয়েছে। বেঞ্চগুলো ৩ ফুট দূরত্বে সাজানো হয়েছে। ২৬ জন শিক্ষকের মধ্যে ২৩ জন টিকা নিয়েছেন।

নড়াইলের লোহাগড়া সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী ১ হাজার ৬০০। শিক্ষক ৩৫ জন। শিক্ষকদের সবাই টিকা নিয়েছেন। চারটি তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র কেনা হয়েছে। আইসোলেশনের জন্য একটি কক্ষ প্রস্তুত করা হয়েছে। হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

শেরপুরের নালিতাবাড়ীর গড়কান্দা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে করোনা প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টি করতে একটি ব্যানার দেখা গেছে। তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র গতকাল রাতে হাতে পাওয়ার কথা ছিল। আইসোলেশনের জন্য কক্ষ ঠিক হয়েছে। মাস্ক কেনা হয়েছে ৩০০টি।

রংপুরের বদরগঞ্জ পৌরসভার ছকিমুদ্দিনেরডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র আছে। পাঁচ শিক্ষকের মধ্যে চারজন টিকা নিয়েছেন।

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের ১৩৯ নম্বর আব্দুর রশিদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও মোটামুটি প্রস্তুতি নিয়েছে। উপজেলা শিক্ষক সমিতির নেতাদের মাধ্যমে দুই হাজার টাকা দিয়ে তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র কেনা হয়েছে।

আরও পড়ুন

প্রস্তুতি পিছিয়ে

সিলেটের আম্বরখানা দর্শন দেউড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক ৯ জন ও শিক্ষার্থী ৫০০ জন। সচেতনতামূলক ব্যানার বা অন্য কোনো উপায় প্রদর্শনের ব্যবস্থা হয়নি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শীমূল আকতার বলেছেন, ব্যানার মুদ্রণ করা হলেও বিদ্যালয়টি গণটিকাদানকেন্দ্র থাকায় সেটি এখনো টানানো যায়নি। একই কারণে আইসোলেশন কক্ষও প্রস্তুত করার কাজ শেষ হয়নি। তাপমাত্রা মাপার জন্য দুটো ডিজিটাল থার্মোমিটার কেনা হয়েছে।

রাজশাহীর বাগমারার ভবানীগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র কেনা হয়নি। মাঠ, কক্ষ ও ছাদ পরিষ্কারের দৃশ্য চোখে পড়েনি। হাত ধোয়ার জায়গা প্রস্তুত হয়নি। তবে বিদ্যালয়ের দোতলার একটি কক্ষে ‘আইসোলেশন কক্ষের’ জন্য একটি শয্যা প্রস্তুত দেখা গেছে। শিক্ষক ও কর্মচারীরা টিকা নিয়েছেন।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনসুর রহমান বলেন, করোনাকালে মাঠে প্রতি শুক্র ও সোমবার হাট বসে। শুক্রবারও হাট বসবে, এতে মাঠটি নোংরা হয়ে যাবে। তাই শনিবার পরিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা সদরের ইঞ্জিনিয়ার ফারুক তালুকদার মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রবেশমুখে সচেতনতামূলক ব্যানার নেই। তাপমাত্রা মাপার যন্ত্রও কেনা হয়নি। প্রস্তুত হয়নি আইসোলেশন কক্ষ। মাঠে বড় আকৃতির ঘাস। শিক্ষক-কর্মচারীরা টিকা নিয়েছেন।

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের শহীদ স্মৃতি সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ও খুব একটা প্রস্তুত নয়।

[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকা থেকে প্রথম আলোনিজস্ব প্রতিবেদকপ্রতিনিধিরা]