খান-এ-সবুর নাম পাল্টে যশোর রোড রাখার নির্দেশ

খুলনার ‘খান-এ-সবুর রোড’-এর নাম পাল্টে ‘যশোর রোড’ করতে খুলনা সিটি করপোরেশনকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘শাহ আজিজুর রহমান মিলনায়তনের’ নাম পরিবর্তন করতে বলা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে।
একটি আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন গত রোববার এ আবেদনটি করেন। আবেদনের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী এ কে রাশেদুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।
এ কে রাশেদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থাপনা, সড়ক, অবকাঠামো থেকে স্বাধীনতাবিরোধীদের নাম বাদ দেওয়ার আরজি জানিয়ে ২০১২ সালে শাহরিয়ার কবির ও মুনতাসীর মামুন একটি রিট আবেদন করেছিলেন। ওই সময় রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে আদালত অন্তর্বর্তী আদেশে বলেন, রুল শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত খান-এ-সবুর ও শাহ আজিজুর রহমানের নাম ব্যবহার স্থগিত রাখতে হবে। কিন্তু আদালতের ওই নির্দেশনা অনুসরণ করা হচ্ছে না জানিয়ে রিট আবেদনকারীরা গত রোববার আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত নাম পরিবর্তনের নির্দেশ দিলেন। রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এ আদেশ কার্যকর থাকবে।
বাংলাদেশে স্বাধীনতাবিরোধীদের নামে থাকা সড়ক, স্থাপনা ও অবকাঠামোর নাম পরিবর্তনের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, কেন সেগুলো মুক্তিযোদ্ধাদের নামে করা হবে না এবং যারা ওই নামকরণের জন্য দায়ী, তাদের কেন বিচারের আওতায় আনা হবে না—তা ওই রুলে জানতে চেয়েছিলেন আদালত।
মুক্তিযুদ্ধের সময় খুলনা থেকে তৎকালীন যশোর রোড ধরে অসংখ্য বাঙালি শরণার্থী ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় নিয়েছিলেন। মার্কিন সাহিত্যিক অ্যালেন গিন্সবার্গের বিখ্যাত কবিতা ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’-এও এই সড়কের নাম এসেছে। পরে এই সড়কের
নামকরণ হয় খান-এ-সবুর। তিনি পাকিস্তান আমলে আইয়ুব খান সরকারের মন্ত্রী ও মুসলিম লীগের নেতা ছিলেন।
মুসলিম লীগের নেতা শাহ আজিজুর রহমান সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমলে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের পর দালাল আইনে স্বাধীনতাবিরোধী ও রাজাকারদের বিচার শুরু হলে খান-এ-সবুর ও শাহ আজিজুর রহমানের নাম দালাল তালিকায় ছিল।