খালে পড়ে গলা পর্যন্ত কাদায় ডুবে যাওয়া নারীকে উদ্ধার

খালে পড়ে যাওয়া নারীকে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁওয়ের বালুরটাল এলাকার একটি খালে পড়ে যাওয়া এক নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ওই নারীকে জীবিত উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে এই উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে ফায়ার সার্ভিসের কালুরঘাট স্টেশন।

উদ্ধার হওয়া নারীর বিস্তারিত নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তাঁর বয়স আনুমানিক ৬৫ বছর। উদ্ধারের পর তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের কালুরঘাট স্টেশনের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা মো. বাহার উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় এক ব্যক্তি ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে এক নারীর খালে পড়ে যাওয়ার বিষয়টি জানান। পরে তা ফায়ার সার্ভিসকে অবহিত করা হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। ওই নারীর প্রায় গলা পর্যন্ত খালের কাদায় ডুবে গিয়েছিল। তাঁকে দ্রুত উদ্ধারের পর চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

বাহার উদ্দিন বলেন, ‘ওই নারী তাঁর নাম-ঠিকানা কিছুই জানাতে পারেননি। তাঁকে কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন মনে হয়েছে। তবে স্থানীয় লোকজন তাঁকে কখনো এলাকায় দেখেননি।’

চট্টগ্রাম নগরের উন্মুক্ত নালা ও খালগুলো রীতিমতো মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। এখানকার নালা-খালে পড়ে একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।

উদ্ধারের পর নারীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়
ছবি: সংগৃহীত

গত বছরের জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত নগরের উন্মুক্ত নালা-খালে পড়ে শিশুসহ অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজনের খোঁজ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

চলতি বছরের ২৬ মার্চ নগরের একটি নালায় পড়ে যায় এক শিশু। সেদিন বিকেলে নগরের পুরোনো চান্দগাঁওয়ের পাঠানিয়া গোদা এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, ফুটপাত দিয়ে দুই নারী হেঁটে যাচ্ছেন। তাঁদের সঙ্গে থাকা এক শিশুও হাঁটছিল। হাঁটার একপর্যায়ে সাফা মারওয়া ইলেকট্রনিকসের সামনের ফুটপাতে থাকা গর্তে পড়ে যায় শিশুটি। এ সময় দুই নারী কোনোরকমে শিশুটিকে টেনে তোলেন।

গত বছরের ৩০ জুন নগরের মেয়র গলি এলাকায় চশমা খালে পড়ে এক অটোরিকশাচালক ও এক যাত্রীর মৃত্যু হয়। ২৫ আগস্ট নগরের মুরাদপুরে চশমা খালে পা পিছলে পড়ে তলিয়ে যান সবজি বিক্রেতা ছালেহ আহমেদ। তাঁর খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি। ২৭ সেপ্টেম্বর নগরের আগ্রাবাদের মাজারগেট এলাকায় ফুটপাত থেকে পা পিছলে নালায় পড়ে মৃত্যু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রী শেহেরীন মাহমুদ সাদিয়ার। ৬ ডিসেম্বর নগরের চশমা খালে তলিয়ে যায় শিশু মো. কামাল উদ্দিন। তিন দিন পর নগরের মির্জা খাল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নগরের উন্মুক্ত নালা-খালে পড়ে একাধিক মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও সিডিএ—কেউ এর দায় নিচ্ছে না। এসব মৃত্যুর জন্য উল্টো পরস্পরকে দায়ী করে আসছে সংস্থা দুটি। সংস্থা দুটির ভূমিকায় চট্টগ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ রয়েছে। সরকারের এক তদন্ত প্রতিবেদনে এমন মৃত্যুর জন্য দুটি সংস্থার গাফিলতিকে দায়ী করা হয়েছে।