খুলনায় পাঁচ গুণী ব্যক্তিকে সম্মাননা
খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি খুলনার পাঁচজন গুণী ব্যক্তিকে ‘জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা-২০১৪’ প্রদান করেছে। গতকাল রোববার খুলনা অফিসার্স ক্লাব মিলনায়তনে এ সম্মাননা দেওয়া হয়।
সম্মাননাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন কণ্ঠসংগীতে ওস্তাদ আব্দুল মালেক চিশতী, নাট্যকলায় এস এম মতিউর রহমান, নৃত্যকলায় ঊষা সরকার, ফটোগ্রাফিতে নূরুল হক লাবলু ও যন্ত্রশিল্পে নিখিল কৃষ্ণ মজুমদার।
সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা শিল্পকলা একাডেমির সভাপতি ও খুলনা জেলা প্রশাসক মোস্তফা কামাল।
সম্মাননাপ্রাপ্তদের সম্পর্কে জানা গেছে, ওস্তাদ আব্দুল মালেক চিশতী ১৯৬০ সালে খুলনার একমাত্র গানের স্কুল ‘একাডেমি অব ফাইন আর্টস’-এ সেতার ও সংগীত শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৯ সালে খুলনা বেতারের প্রতিষ্ঠালগ্নে প্রথম শিল্পী হিসেবে তিনি একটি নজরুলসংগীত পরিবেশন করেন। ২০১২ সালে অক্টোবর মাসে ভারত সরকারের আমন্ত্রণে দিল্লি, জয়পুর ও আজমির শরিফের অনুষ্ঠানে কাওয়ালি পরিবেশন করেন।
এস এম মতিউর রহমান খুলনার একজন খ্যাতিমান নাট্যশিল্পী। ১৯৬৮ সালে তিনি দেশের প্রাচীন নাট্য প্রতিষ্ঠান ‘খুলনা নাট্য নিকেতনের’ সদস্যপদ লাভ করেন। একসময় তিনি নাট্য পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং শ্রেষ্ঠ নাট্য পরিচালকসহ অনেক পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি প্রখ্যাত চলচ্চিত্রাভিনেতা আনোয়ার হোসেন, গোলাম মোস্তফা, আনোয়ারা প্রমুখের সঙ্গে অভিনয় করেছেন।
আলোকচিত্রশিল্পী নূরুল হক লাবলু ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক সোসাইটির সদস্যপদ লাভ করেন। তিনি ফটোগ্রাফি বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ে চারবার পুরস্কৃত হয়েছেন। ১৯৯০ সালে বাংলাদেশের প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য ভিডিও চলচ্চিত্র উৎসব ও প্রতিযোগিতায় তাঁর নির্মিত ‘ফলাফল’ শ্রেষ্ঠ ছবি হিসেবে পুরস্কৃত হয়। ওই ছবিটি আরও ১০টি বিষয়ের মধ্যে পাঁচটিতে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার লাভ করে।
১৯৫৪ সালে বাগেরহাট জেলায় জন্ম নেওয়া ঊষা সরকার নজরুল একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা রাশেদ উদ্দিন তালুকদারের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। ১৯৮২ সালে খুলনায় শিশু একডেমি প্রতিষ্ঠিত হলে সেখানে প্রথম নাচের বিভাগ চালু করেন তিনি।
যন্ত্রসংগীতশিল্পী নিখিল কৃষ্ণ মজুমদার ২০০২ সাল থেকে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক তানভীর মোকাম্মেলের ‘কিনো আই ফিল্ম সোসাইটি’র একজন যন্ত্রশিল্পী হিসেবে কাজ শুরু করেন। তিনি চিত্রা নদীর পাড়ে, লাল শালু, ওই যমুনা, নিঃসঙ্গ সারথি, লালন, রাবেয়া এবং সবশেষ জীবন ঢুলি চলচ্চিত্রে অভিনয় করাসহ যন্ত্রসংগীতে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান, বিভাগীয় কমিশনার আবদুস সামাদ ও জেলা পরিষদের প্রশাসক শেখ হারুনুর রশীদ।