গাংনীতে দলীয় কোন্দলে আ.লীগ পেল নতুন মুখ

তৃণমূল নেতারা বলছেন, এক দশক ধরে গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগ দুই ভাগে বিভক্ত। এক পক্ষ অপর পক্ষের সঙ্গে সাংঘর্ষিক অবস্থায় রয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক ও বর্তমান সাংসদ মকবুল হোসেনের কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে অসংখ্যবার। বিভক্ত রাজনীতির উত্তাপ ছড়িয়েছে তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মধ্যে। এ কারণে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব হয়তো মনে করেছেন, এমন একজনকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, যিনি দলের বিভক্ত রাজনীতির বাইরে গিয়ে সবাইকে একত্র করে নৌকাকে বিজয়ী করে আনবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এম এ খালেক প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রতীক বরাদ্দের সময় দল মনোনয়নের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবে। দীর্ঘ সময় দলের জন্য কাজ করেছি। মনোনয়নের বিষয়টি দল অবশ্যই মূল্যায়ন করবে।’

এই আসন থেকে বর্তমান সাংসদ মকবুল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক ও গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহিদুজ্জামান ছাড়াও মনোনয়ন ফরম তুলেছিলেন সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ সেলিনা আকতার বানু, সাবেক পৌর মেয়র আহমেদ আলী, গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম শফিকুল আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মকলেচুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক নুরজাহান বেগম, জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিম সাজ্জাদ লিখন এবং জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাথুলী ইউপির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান।

মনোনয়ন পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ১৯৮৩ সালে ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে তাঁর রাজনীতির শুরু। ১৯৮৬ সালে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে দলের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন। ২০০১ সালে সংসদ নির্বাচনের সময় বিএনপির জেল-জুলুমের শিকার হয়ে ২৯টি মামলা ও ছয়বার জেলে যেতে হয়েছে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে দল তাঁকে মনোনীত করেছে। তিনি বলেন, এবার দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, যাতে করে ছিটকে থাকা তৃণমূল নেতা-কর্মীরা এক হয়ে নির্বাচনে কাজ করতে পারেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের কাথুলী ইউনিয়নের সভাপতি গোলজার হোসেন বলেন, তৃণমূল নেতাদের ঐক্যবদ্ধ করে নির্বাচনে জেতার জন্য লড়াইয়ের প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে সাংসদ ও সাধারণ সম্পাদকের বিভেদের মধ্যে একজন নতুন মুখকে মনোনয়ন দেওয়াটা দলের জন্য ইতিবাচক সিদ্ধান্ত বলে বিবেচিত হবে।

বামুন্দি ইউনিয়নের চারজন নেতা বলেন, গত নির্বাচনে দলের প্রবীণ নেতামকবুল হোসেন বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে স্বতন্ত্র প্রতীকে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন। দলের গৌরব ফেরাতে এবার নতুন মুখ সাহিদুজ্জামানকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তবে এবারও মকবুল হোসেন স্বতন্ত্র প্রতীকে নির্বাচন করতে পারেন বলে তাঁরা ধারণা করছেন।