‘গোল্ডেন’ মনির ১৮ দিনের রিমান্ডে

রিমান্ড মঞ্জুর হওয়ার পর আদালত থেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মনির হোসেনকে। ঢাকা, ২২ নভেম্বরছবি: দীপু মালাকার

অবৈধ অস্ত্র, মাদক ও বৈদেশিক মুদ্রা রাখার আলাদা তিন মামলায় মনির হোসেন ওরফে ‘গোল্ডেন’ মনিরকে ১৮ দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত এ আদেশ দেন।

এর আগে মনিরকে আদালতে হাজির করে তিন মামলায় ৭ দিন করে মোট ২১ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের দুই মামলায় ৭ দিন করে ১৪ দিন ও মাদক মামলায় ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন সরকারি কৌঁসুলি আবদুল্লাহ আবু। আর আসামি মনিরের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী।

রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আদালতে বলা হয়, আসামির বাসায় অবৈধ অস্ত্র ও টাকাপয়সা পাওয়া গেছে। এর উৎস জানার জন্য আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ জরুরি। অপর দিকে আসামিপক্ষে আদালতে বলা হয়, হয়রানি জন্য এই মামলা।

গতকাল শনিবার র‍্যাব রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় অভিযান চালিয়ে মনিরকে গ্রেপ্তার করে। র‍্যাবের ভাষ্য, মনির অবৈধ উপায়ে এক হাজার কোটি টাকার বেশি সম্পদের মালিক হয়েছেন।

নব্বইয়ের দশকে গাউছিয়া মার্কেটের কাপড়ের দোকানের বিক্রয়কর্মী ছিলেন মনির। এরপর মৌচাক মার্কেটের ক্রোকারিজের দোকানে চাকরি নেন। এরপর তিনি বিমানবন্দরকেন্দ্রিক লাগেজ পার্টি ও সোনার চোরাচালানে জড়িয়ে পড়েন। পরিচিতি পান ‘গোল্ডেন মনির’ নামে।

র‍্যাবের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ গতকাল জানান, বিক্রয়কর্মী থেকে লাগেজ পার্টিতে যোগ দেওয়ার পর মনির শুরুতে কর ফাঁকি দিয়ে কাপড়, কসমেটিক, ইলেকট্রনিক পণ্য, কম্পিউটারসামগ্রীসহ বিভিন্ন মালামাল আনা-নেওয়া করতেন। একপর্যায়ে আকাশপথে সোনা চোরাচালানে জড়িয়ে পড়েন।

সোনা চোরাচালানের মাধ্যমে অর্থবিত্তের মালিক হওয়ার পর কবজায় নেন রাজউক। কারসাজির মাধ্যমে মালিক হন একের পর এক প্লটের। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গেও মনিরের সখ্য ছিল অন্য রকম।

রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় ডিআইটি প্রজেক্টের ১১ নম্বর সড়কে মনিরের ছয়তলা বাড়ি। সেখানে গত শুক্রবার রাত ১১টায় অভিযান শুরু করে র‍্যাব। সাড়ে ১২ ঘণ্টার অভিযান শেষে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় সংবাদ সম্মেলন করে মনিরকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানায় র‍্যাব। সেই বাসা থেকে গুলিসহ ১টি বিদেশি পিস্তল, ৪ লিটার বিদেশি মদ, ৩২টি নকল সিল, ৮ লাখ টাকার বেশি মূল্যমানের বিদেশি মুদ্রা, ৬০০ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১ কোটি ৯ লাখ টাকা জব্দ করা হয়।