গ্রামীণ সংস্কৃতি বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে হবে

টাঙ্গাইল অঞ্চলের অন্যতম গ্রামীণ লোকজ উৎসব ‘বেহুলা লাচারি’। এবার এ উৎসব শুধু গ্রামীণ মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। মন্ত্রী, সচিবসহ রাজধানী থেকে আসা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের উপস্থিতিতে এ উৎসব ভিন্ন মাত্রা পায়।

টাঙ্গাইল অঞ্চলের বেহুলা লাচারি একটি জনপ্রিয় পালা। একসময় এ জেলায় নদী-তীরবর্তী প্রায় প্রতিটি গ্রামেই এ পালার দল ছিল। কালের আবর্তে অনেক গ্রামে এখন আর এ দল দেখা যায় না। তারপরও কালিহাতী, ঘাটাইল, ভুয়াপুর, গোপালপুর অঞ্চলে ১০-১৫টি দল টিকে রয়েছে। এঁরা প্রতিবছর শ্রাবণ-সংক্রান্তিতে (শ্রাবণ মাসের শেষ দিন) বড় বড় নৌকায় নৃত্যগীত করতে করতে নদীর স্রোতের অনুকূলে নৌকা ভাসিয়ে দেন।

গতকাল বুধবার সকালে কালিহাতীর এলেঙ্গা ঘাট থেকে এ রকম একটি দল বেহুলা লাচানি বের করে। বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এর উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সারা বিশ্বের মানুষের কাছে তুলে ধরার জন্য ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন গড়ে তুলেছিলেন। আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতি বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে হবে। এ সংস্কৃতির টানেই বিদেশি পর্যটকেরা ছুটে আসবে।’

এ সময় সংস্কৃতিসচিব আখতারী মমতাজ, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান, টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোসেন, লোক-গবেষক শফিউদ্দিন তালুকদার প্রমুখ বক্তব্য দেন।

পরে নৌকায় নৃত্যগীত সহকারে নদীতে যাত্রা শুরু হয়। মোহাম্মদ মনি মিয়ার নেতৃত্বে বিভিন্ন ঘাটে মনসা দেবীর উদ্দেশে কলার ভেলায় ফল, ডিম ভাসানো হয়। কয়েকটি ঘাট পার হয়ে নৌকাটি কালিহাতীর আকুয়ায় পৌঁছে। সেখানে বেহুলার বাসরঘরে লখিন্দরের সর্প দংশনের পালা পরিবেশন করা হয়। অতিথিরা অন্য একটি নৌকায় করে বেহুলা লাচারি দলটির পেছনে পেছনে যান।

লোক-গবেষক শফিউদ্দিন তালুকদার বলেন, টাঙ্গাইলের বিভিন্ন এলাকায় ১২টি দল এ ধরনের আয়োজন করেছে। জাতি-ধর্মনির্বিশেষে গ্রামীণ এই উৎ​সব উদ্‌যাপন করা হয়।