চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে জেলা ইজতেমা শুরু

‘টঙ্গীতে কখনো যাওয়া হয়নি। প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম জেলা ইজতেমা হাটহাজারীর মির্জাপুর ইউনিয়নের চারিয়া গ্রামে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাই বুধবার বিকেলে বাড়ি থেকে এসেছি বয়ান শোনার জন্য।’
বললেন চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার মাতামুহুরী প্রজেক্ট এলাকার আজিমপুর গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মোহাম্মদ মোস্তফা (৪৫)। শুধু মোস্তফা নন, শীত উপেক্ষা করে লাখো মুসল্লি উপস্থিত হয়েছেন ইজতেমা মাঠে। এসেছেন বিদেশিরাও।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাদ ফজর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে হাটহাজারীতে তিন দিনব্যাপী চট্টগ্রাম জেলা ইজতেমা শুরু হয়েছে।
গতকাল সন্ধ্যায় মুসল্লিদের শুকনো খাবার, বিছানাপত্রসহ প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে ইজতেমায় আসতে দেখা যায়। আয়োজকেরা বলেন, কাল শনিবার সকালে আখেরি মোনাজাত পর্যন্ত মুসল্লিদের এই আগমন অব্যাহত থাকবে।
ইজতেমা কমিটির সদস্য মাওলানা আবু নাছের প্রথম আলোকে বলেন, চট্টগ্রামের ১৪ উপজেলা ও নগরের বাসিন্দারা এই ইজতেমায় অংশগ্রহণ করছেন। টঙ্গীতে জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠেয় বিশ্ব ইজতেমায় চাপ কমানোর জন্য জেলাভিত্তিক ইজতেমা চালু করা হয়েছে। তিনি বলেন, চারিয়ার ইজতেমা মাঠে ১০ লাখ মুসল্লির অবস্থান নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ৫ লাখ মুসল্লি ইজতেমায় অংশ নিয়েছেন।
মাওলানা আবু নাছের জানান, বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজের পর ভারতের মাওলানা রিজোয়ান উর্দুতে আমবয়ান করেন। এর বাংলা তরজমা করেন মুফতি শাহেদ। তিনি জানান, আখেরি মোনাজাত পর্যন্ত বিশিষ্ট আলেম ও তাবলিগ জামাতের শীর্ষস্থানীয় মুরব্বিরা বয়ান করবেন।
যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব ও দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ২০০ জন বিদেশি ইজতেমায় অংশ নিয়েছেন। ইজতেমা মাঠের দক্ষিণ পাশে টিনের ছাউনি দিয়ে আলাদাভাবে জায়গা করা হয়েছে তাঁদের জন্য। মালয়েশিয়া থেকে আসা আহমেদুর রহমান বিদেশিদের জন্য করা আয়োজনের ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) মুহাম্মদ রেজাউল মাসুদ বলেন, ইজতেমার নিরাপত্তায় চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মুসল্লিদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে হাটহাজারী-খাগড়াছড়ি সড়কে বাস ও ট্রাকসহ ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
এদিকে ইজতেমা মাঠের আশপাশের এলাকায় গড়ে উঠেছে তিন শতাধিক অস্থায়ী দোকান। এসব দোকানে খাবার, শীতের কাপড় ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিক্রি করতে দেখা গেছে।