চবিতে ছাত্রলীগের অবরোধ, বন্ধ শাটল চলাচল

অবরোধের পর থেকে ক্যাম্পাসে অচল অবস্থা বিরাজ করছে। বিভিন্ন বিভাগের ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে
ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের ওপর হামলার কারণে মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে ও সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেছেন শাখা ছাত্রলীগের একাংশের নেতা–কর্মীরা। আজ বুধবার ভোররাত চারটায় অবরোধ শুরু হয়। অবরোধের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, শাখা ছাত্রলীগের উপপক্ষ ভার্সিটি এক্সপ্রেসের নেতা প্রদীপ চক্রবর্তী ও মোহাম্মদ রাশেদ ১ নম্বর গেট থেকে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটায় মোটরসাইকেলে করে ক্যাম্পাসে আসছিলেন। পরে মদন ফকির মাজার গেট এলাকায় এলে স্থানীয় কয়েকজনের হামলার শিকার হন। এ সময় তাঁদের মারধর ও  মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। ঘটনাটি জানাজানি হলে ভার্সিটি এক্সপ্রেস উপপক্ষের নেতা–কর্মীরা মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে অবরোধ শুরু করেন।

এদিকে অবরোধের পর থেকে ক্যাম্পাসে অচল অবস্থা বিরাজ করছে। বিভিন্ন বিভাগের ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক চৌধুরী আমীর মোহাম্মদ মুছা বলেন, ‘অবরোধের কারণে শিক্ষক ও কর্মচারীদের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। তবে এ বিষয়ে এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।’

জানতে চাইলে ভার্সিটি এক্সপ্রেসের নেতা প্রদীপ চক্রবর্তী বলেন, গতকাল রাতে স্থানীয় বাসিন্দা হানিফ ও তাঁর দলবল তাঁদের ওপর হামলা করে। পরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও ফতেপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ হানিফ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ওই সময় তিনি ঘুমাচ্ছিলেন। সকাল সাতটায় ঘুম থেকে উঠে শোনেন তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ে দুজনকে মারধরের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হচ্ছে।

সহকারী প্রক্টর শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্রলীগের একাংশ ভিএক্সের নেতা–কর্মীরা অবরোধ করেছেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে ও সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেছেন ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা। অবরোধের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে
ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রামের নগরের বটতলী থেকে ক্যাম্পাসে দিনে সাতবার আসা–যাওয়া করে শাটল ট্রেন। এ ট্রেনে দৈনিক ১০ হাজার শিক্ষার্থী যাতায়াত করেন। কিন্তু অবরোধের পর থেকে বন্ধ রয়েছে যোগাযোগের এ বাহন। অনেকেই উপায় না পেয়ে নগর থেকে বাসে ক্যাম্পাসের ১ নম্বর গেট এসেছেন। ১ নম্বর গেট থেকে ক্যাম্পাসের দুরত্ব ২ কিলোমিটার। ওখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা রিকশায় ক্যাম্পাসে আসেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু ওই এলাকা থেকেও কোনো বাহন ক্যাম্পাসে আসেনি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

ষোলশহর স্টেশনমাস্টার এস এম ফখরুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের অবরোধের পর কয়েকজন নেতা–কর্মী বটতলী স্টেশনে শাটল ট্রেন অবরোধ করেন। এর পর থেকে শাটল বন্ধ রয়েছে। ট্রেন চলার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।