চমেকে ডায়ালাইসিস জটিলতা কাটলেও রয়েছে শঙ্কা

কেন্দ্রের সামনে কিডনি রোগীদের অপেক্ষা
ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস জটিলতা আপাতত কেটেছে। তবে রোগীরা আশঙ্কা করছেন, যেকোনো সময় আবার বন্ধ হতে পারে। কারণ, দায়িত্বরত প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তাঁদের বলা হচ্ছে, চার দিনের মধ্যে সরকারের কাছ থেকে প্রতিষ্ঠানটি পাওনা টাকা না পেলে পুনরায় ডায়ালাইসিস বন্ধ করে দেবে।

স্যানডোর ডায়ালাইসিস সার্ভিসেস বাংলাদেশ লিমিটেড নামে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠান রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটে ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস দিতে চুক্তিবদ্ধ রয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা বলেন, জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটে ও চমেক হাসপাতালের কাছে তাঁদের ২৩ কোটি টাকা পাওনা। পাওনা বকেয়া থাকায় ডায়ালাইসিস পরীক্ষার জন্য সেন্টারের স্টাফদের বেতনও দেওয়া যাচ্ছে না। তাই তাঁরা গতকাল বুধবার সকালে ডায়ালাইসিস দেওয়া বন্ধ করে দেন। টাকা পরিশোধের আশ্বাসে প্রায় সাত ঘণ্টা পর গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার দিকে পুনরায় ডায়ালাইসিস শুরু হয়।

এর আগে গত ৪ জানুয়ারিও টাকার অভাবে রি–এজেন্টসহ নানা সংকটের কথা বলে ডায়ালাইসিস বন্ধ রেখেছিল প্রতিষ্ঠানটি।

আজ দুপুরে চমেকে গিয়ে দেখা যায়, ডায়ালাইসিসের জন্য অপেক্ষা করছেন রোগী ও স্বজনেরা।

২৫ বছর বয়সী রোগী মো. আবদুল কাদের বলেন, ‘আজ কোনো সমস্যা হচ্ছে না। তবে স্যানডোর আমাদের বলেছে, চার দিনের মধ্যে টাকা না পেলে আবার ডায়ালাইসিস বন্ধ রাখা হতে পারে।’

আবদুল কাদের সপ্তাহে দুইবার ডায়ালাইসিস নেন। তাঁর পাশে অপেক্ষমাণ মধ্যবয়সী মো. মঞ্জুকে সপ্তাহে তিনবার আসতে হয়।

এখানে প্রতিদিন পালা করে ১১০ জন রোগীর ডায়ালাইসিস করা হয়
ছবি: প্রথম আলো

মঞ্জু বলেন, ‘জানি না, এ জটিলতার স্থায়ী সমাধান কখন হবে। বাইরে ডায়ালাইসিস করাতে অনেক টাকা। এত টাকা দেওয়ার সামর্থ্য নেই। এখানে মাসে দু–একটা ৫১০ ও বাকিগুলো ৩ হাজার টাকায় করতে পারি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চমেক হাসপাতাল কেন্দ্রের ( স্যানডোর দ্বারা পরিচালিত) কর্তব্যরত প্রধান চিকিৎসক হিমেল আচার্য প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের বলা হয়েছে, মন্ত্রণালয় চার দিনের মতো সময় নিয়েছে। এর মধ্যে যদি বকেয়া টাকার মীমাংসা না হয়, তাহলে সেটা আমাদের ঢাকার প্রধান কার্যালয় সিদ্ধান্ত নেবে, কী হবে। আমরা কেবল যেভাবে সিদ্ধান্ত দেয়, সেটা মেনে চলছি।’

চমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এই হাসপাতালে স্যানডোরের ৩১টি ডায়ালাইসিস মেশিন আছে। প্রতিদিন পালা করে ১১০ জন রোগীর ডায়ালাইসিস করা হয়। ভর্তুকি দিয়ে প্রতি ডায়ালাইসিসে খরচ হয় ৫১০ টাকা। আর ভর্তুকি ছাড়া খরচ হয় ২ হাজার ৭৯৬ টাকা। স্যানডোরের পাশাপাশি এই হাসপাতালে পাঁচটি সরকারি ডায়ালাইসিস মেশিন আছে।