চলতি মাসেই টিকা পাওয়ার আশাবাদ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক
ফাইল ছবি

চলতি মাসেই টিকা পেতে আশাবাদী স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘আমরা ভ্যাকসিনেশন সবার আগে পেয়েছিলাম। অন্যান্য দেশের আগেই আমাদের ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবেই এই ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছিল। কিন্তু ভ্যাকসিনের সরবরাহ ঠিকমতো পেলাম না। রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে চুক্তি হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থারও আমাদের ছয় কোটি ডোজ দেওয়ার কথা। সেখানেও আমরা জোর তদবির চালাচ্ছি। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে জোর তদবির চালাচ্ছি। এই মাসে ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।’

শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জে প্রয়াত মায়ের স্মৃতিচারণা ও দোয়া মাহফিলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মানিকগঞ্জ সদরে কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজের প্রথম লেকচার গ্যালারিতে এই মাহফিলের আয়োজন করে কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ ও ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে করোনা সংক্রমণের আগে গত বছরের জানুয়ারি মাসে জেলা কমিটি গঠন করেছি। এক মাস পরে ট্রিটমেন্ট প্রটোকল তৈরি করা হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজে। করোনার ট্রিটমেন্ট তো কেউ জানেন না। অনেকেই বলেন, আপনারা তো কোনো ব্যবস্থা নেননি। আমি যদি প্রশ্ন করি, কী ব্যবস্থা নেব আপনারা একটু বলে দেন। তাহলে আমরা সেই ব্যবস্থা নিতাম। এই ব্যবস্থা সম্পর্কে পৃথিবীর কারও জানা ছিল না। আমরা জেনে, দেখে ও শিখে তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী সব সময় গাইড করতেন।’

জাহিদ মালেক বলেন, ‘করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য আমরা প্রায় ১২ থেকে ১৪ হাজার শয্যা করেছি। ৭০-৮০ হাসপাতাল করা হয়েছে। একটি ল্যাব থেকে এখন ৫০০টি ল্যাব করা হয়েছে। এটা কিন্তু ছোট বিষয় নয়। প্রায় ১০০টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা আছে। ১৬ হাজার বেড আছে সেন্ট্রাল অক্সিজেনযুক্ত। আগে খুবই অল্প ছিল। লিকুইড অক্সিজেন প্লান দুই-চারটি হাসপাতালে ছিল। আমরা টেলিমেডিসিন চালু করলাম। বহু লোক সেবা নিয়েছে। এ কারণে দেশে মৃত্যুর হার কম। পৃথিবীর মৃত্যুর হার আড়াই ভাগ আর বাংলাদেশে দেড় ভাগ। ভারতে তিন লাখ, আমেরিকায় ছয় লাখ লোক মারা গেছেন। আমাদের দেশে ১২ হাজার।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি বিভাগের আটটি ক্যানসার ও আটটি কিডনি হাসপাতালের অনুমোদন হয়েছে। এসব হাসপাতাল নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হবে। পুরো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। সব ব্যবস্থা ডিজিটালাইজড হবে। প্রত্যেক রোগীর স্বাস্থ্যের ডেটা থাকবে। পুরো স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজড করা হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, স্বাস্থ্য খাতে বিশাল বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। ৩৩ হাজার কোটি টাকা বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া ১০ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে ৪৩ হাজার কোটি টাকা স্বাস্থ্য খাতের জন্য বাজেট রয়েছে।
কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে স্মৃতিচারণা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ইউসুফ ফকির, জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস, পুলিশ সুপার রিফাত রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক গৌতম রায়, প্রকল্প পরিচালক খান মোহাম্মাদ আরিফ, জেলা ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান প্রমুখ।

এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেলা সদরের গড়পাড়া উচ্চবিদ্যালয় মাঠে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আমাদের সীমান্তবর্তী এলাকায় করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। তবে দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণে আছে বলেই দেশের অর্থনীতি ভালো আছে।’

উল্লেখ্য, গত ২৭ মে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মা ফৌজিয়া মালেক বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় মারা যান। ফৌজিয়া মালেক ঢাকা সিটি করপোরেশনে সাবেক মেয়র এবং পাটমন্ত্রী কর্নেল (অব.) প্রয়াত আবদুল মালেকের স্ত্রী।