চলে গেলেন জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী

প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ অধ্যাপক জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী আর নেই। গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টায় রাজধানীর বনানীর নিজ বাসায় শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
রাত একটার দিকে জিল্লুর রহমানের নাতনি অবন্তি শামা আফরোজ প্রথম আলোকে জানান, রাতেই জিল্লুর রহমানের মরদেহ শমরিতা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং সেখানে হিমঘরে রাখা হবে।
জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তাঁর দুই ছেলে দেশের বাইরে আছেন। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানাজা ও দাফনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীর জন্ম ঝিনাইদহে, ১৯২৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি। ১৯৪৫ সালে যশোর জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করে ভর্তি হন কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে। পরে ইংরেজি সাহিত্যে বিএ ও এমএ ডিগ্রি নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন ঢাকা কলেজে। এরপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে আসেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে পর পর দুই মেয়াদে ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত উপাচার্য ছিলেন জিল্লুর রহমান। ১৯৯০-৯১ সালে দেশের প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন খ্যাতনামা এই শিক্ষাবিদ।
সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় সপ্রতিভ বিচরণ ছিল জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীর। অনুবাদ করেছেন ইংরেজি সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য অনেক বই। লিখেছেন প্রবন্ধ, ভ্রমণকাহিনি। পাঠকপ্রিয় হয়েছে তাঁর কবিতাও। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে, বাঙালীর আত্মপরিচয়, শব্দের সীমানা, কোয়েস্ট ফর আ সিভিল সোসাইটি, দ্য কোয়েস্ট ফর ট্রুথ: সেক্যুলার ফিলোসফি বাই আরজ আলী মাতুব্বর, যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ছিলাম ইত্যাদি। এ ছাড়া বাংলা একাডেমির ইংরেজি থেকে বাংলা অভিধানের সম্পাদক তিনি।
১৯৭৭ সালে আলাওল সাহিত্য পুরস্কার পান জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী। দুই বছর পর ১৯৭৯ সালে পান বাংলা একাডেমি পুরস্কার। ২০১০ সালে পান স্বাধীনতা পুরস্কার।