চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের একজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগের প্রমাণ পায়নি যৌন নিপীড়ন ও প্রতিরোধ সেল। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের একজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন এক ছাত্রী। পরে ওই চিকিৎসককে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়।
প্রতিবেদন জমা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন ও প্রতিরোধ সেলের প্রধান এবং সহ-উপাচার্য শিরীণ আখতার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। এ ব্যাপারে আমরা কোনো বক্তব্য দেব না। যা বলার প্রক্টরই বলবেন।’
প্রক্টর মোহাম্মদ আলী আজগর চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, যৌন নিপীড়ন ও প্রতিরোধ সেল ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পায়নি। তিনি জানান, সেলের প্রতিবেদনে চারটি সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে—বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে নারী চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ানো ও নারী চিকিৎসকদের দিয়ে ছাত্রীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করা। এ ছাড়া চিকিৎসাসেবা দেওয়ার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের আরও সতর্ক, চিকিৎসাকেন্দ্রে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) টেলিভিশন ক্যামেরার সংখ্যা বৃদ্ধি করা এবং প্রত্যেক চিকিৎসকের সঙ্গে একজন করে সহকারী রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।
এ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ‘বৈষম্যহীন’ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত ও সার্বক্ষণিক নারী চিকিৎসক নিয়োগসহ তিন দফা দাবিতে গতকাল দুপুরে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অন্য দাবি হলো সার্বক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স সেবা নিশ্চিত করা।
এ ছাড়া জরুরি অবস্থা ছাড়া সন্ধ্যা ছয়টার পর কোনো ছাত্রীকে মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হবে না বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে সন্ধ্যা ছয়টার পর কোনো ছাত্রীকে জরুরি অবস্থা ছাড়া চিকিৎসা দেওয়া হবে না। সন্ধ্যা ছয়টার পর যদি ছাত্রীরা চিকিৎসা নিতে যান, তাহলে হলের প্রভোস্টের অনুমতি ও একজন আবাসিক শিক্ষককে সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে।
কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে হলের প্রভোস্টের অনুমতি ও আবাসিক শিক্ষকের জন্য বসে থাকতে হবে? এ ধরনের ‘হাস্যকর’ সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা কখনোই মেনে নেবেন না। চিকিৎসাকেন্দ্রে সার্বক্ষণিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ছাত্র রেজা-ই রাব্বির সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী আকাশী চাকমা, মাহবুবা জাহান ও সিগমা পাল, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল মাওয়া, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী নাদিয়া বিনতে কবির প্রমুখ।
মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন।