জাটকা সংরক্ষণ করা গেলে ‘আরও ৬ লাখ টন’ ইলিশ পাওয়া সম্ভব

জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষে আজ সোমবার রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে আয়োজিত কর্মশালায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম
ছবি: সংগৃহীত

যথাযথভাবে জাটকা সংরক্ষণ করা গেলে দেশে অতিরিক্ত ৬ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ সম্ভব। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন ছিল ২ লাখ ৯৮ হাজার মেট্রিক টন। সরকারের পদক্ষেপের কারণে ২০২০-২১ অর্থবছরে তা বেড়ে হয়েছে ৫ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন।

জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষে আজ সোমবার রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে আয়োজিত এক কর্মশালায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) উদ্যোগে ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়নে সহনশীল আহরণ ও জাটকা সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বেইলি রোডের সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।
কর্মশালায় মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে জাটকা ও প্রজননক্ষম ইলিশ সংরক্ষণ এবং অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠার ফলে ইলিশের আকার অনেক বেড়েছে। বাজারে বিভিন্ন আকারের ইলিশ মাছ প্রায় সব সময়ই পাওয়া যাচ্ছে। অতীতে পাওয়া না গেলেও এখন শীতকালেও ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে।

ঘাটে স্তূপ করে রাখা হয়েছে সাগরে ধরা পড়া ইলিশ। ফিশারিঘাট, কক্সবাজার
ছবি: প্রথম আলো

শ ম রেজাউল করিম আরও বলেন, ইলিশ আন্তর্জাতিক পরিসরে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য জিআই সনদপ্রাপ্ত অত্যন্ত সুস্বাদু মাছ। বিশ্বের সর্বোচ্চ ইলিশ উৎপাদনকারী দেশ বাংলাদেশ। শুধু জাটকা সংরক্ষণ করা গেলে আরও ছয় লাখ মেট্রিক টন ইলিশ আহরণের সুযোগ তৈরি হবে। এ জন্য জাটকা রক্ষায় সবাইকে যত্নশীল হতে হবে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, দেশের মৎস্য খাতকে সমৃদ্ধ করার জন্য সরকার সব পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশে ২০ থেকে ২৫ লাখ মৎস্যজীবী ও তাঁদের পরিবার-পরিজনের জীবন-জীবিকা ইলিশ আহরণ ও বিপণনের ওপর নির্ভরশীল। দেশের ইলিশ সম্পদ রক্ষায় জাটকা আহরণ নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের জন্য ভিজিএফ খাদ্যসহায়তা ও বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৫২ হাজার জেলেকে চাহিদা অনুযায়ী নানা উপকরণ সরবরাহ করা হয়েছে। বিকল্প কর্মসংস্থান নিশ্চিত না করে জাটকা আহরণ বন্ধ থাকাকালে জেলেরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন, সেটাও সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় রেখেছে।

পূর্ণিমাতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে রুপালি ইলিশ। চট্টগ্রামের ফিশারিঘাট এলাকায় ট্রলার থেকে নামানোর পর সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে রাখা হচ্ছে ঠেলাগাড়িতে। পরে তা বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হয় বাজারে। আকার ভেদে প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-১০০০ টাকা
ছবি: সৌরভ দাশ

মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ইয়াহিয়া মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক।

কর্মশালায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএফআরআইয়ের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল আলম। প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. নিয়ামুল নাসের।