জাতিসংঘ পরিবেশ পুরস্কার পেলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক সর্বোচ্চ সম্মান ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ পুরস্কার পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপ গ্রহণের স্বীকৃতি হিসেবে তাঁকে এ সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে। খবর বাসসের।
গতকাল সোমবার পলিসি লিডারশিপ ক্যাটাগরিতে ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম ঘোষণা করে জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি)। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় দৃঢ় নেতৃত্বের জন্য তাঁকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।
চলতি বছর এ পর্যন্ত অন্যান্য শ্রেণিতে ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ পুরস্কার পাওয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি, ব্রাজিলীয় কসমেটিক ফার্ম নাচুরা ও দক্ষিণ আফ্রিকার ব্লাক মামবা অ্যান্টি পোচিং ইউনিট। ২৭ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠেয় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাবিষয়কÿশীর্ষ সম্মেলনের সমাপনীতে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে এ পুরস্কার।
জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক বার্ষিক সম্মাননা চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ পলিসি লিডারশিপ, বিজ্ঞান, ব্যবসা ও সুশীল সমাজ—এ চার ক্যাটাগরিতে দেওয়া হয়ে থাকে। এ পর্যন্ত ৬৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এ পুরস্কার পেয়েছে।
ইউএনইপি বলেছে, প্রায় ১৬ কোটি জনসংখ্যার বাংলাদেশ বিশ্বে অন্যতম প্রধান ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কারণে দেশটি বিশ্বের সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি। ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ দীর্ঘকাল ধরে এর ইতিহাসের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। সাম্প্রতিককালে এ ধরনের দুর্যোগের প্রকোপ বেড়েই চলেছে।
ইউএনইপি আরও বলেছে, বিশ্বের স্বল্পোন্নত দেশগুলোর অন্যতম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিনিয়োগ সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জনের সহায়ক। এই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সামগ্রিক পদক্ষেপের স্বীকৃতি এ পুরস্কার।
ইউএনইপির নির্বাহী পরিচালক অচিম স্টেইনার বলেন, ‘বেশ কয়েকটি উদ্ভাবনমূলক নীতিগত পদক্ষেপ এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাকে বাংলাদেশ তার উন্নয়নের মূল প্রতিপাদ্য হিসেবে গ্রহণ করেছে।’
স্টেইনার বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন প্রণয়নসহ নানা কার্যক্রম গ্রহণ করায় বাংলাদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি ও পরিবেশ বিপর্যয়ের প্রভাব মোকাবিলায় অনেক বেশি প্রস্তুত। জলবায়ু পরিবর্তনকে দেশে জাতীয় অগ্রাধিকারের ইস্যু এবং সেই সঙ্গে এ বিষয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণে জোরালো ভূমিকা পালনের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা তাঁর নেতৃত্ব ও দূরদৃষ্টি দেখাতে সক্ষম হয়েছেন।
ইউএনইপি বলেছে, বাংলাদেশ প্রথম দেশ হিসেবে নিজস্ব তহবিল দিয়ে ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠন করেছে। ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত এ তহবিলে ৩০ কোটি মার্কিন ডলার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, সংবিধানে জলাভূমি ও বন্য প্রাণী রক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে শেখ হাসিনার সরকার গৃহীত বন নীতিমালা আবহাওয়ার বেশ কিছু চরমভাবাপন্ন অবস্থার প্রতিকার হিসেবে কাজ করছে। পাশাপাশি দেশে বনাঞ্চলের পরিমাণ প্রায় ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।